অ্যানি বেসান্ত
ব্রিটিশ সমাজকর্মী, নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী, লেখিকা, আধ্যাত্মিক জ্ঞানী এবং সুবক্তা / From Wikipedia, the free encyclopedia
অ্যানি বেসান্ত, বিবাহপূর্ব উড (১লা অক্টোবর ১৮৪৭ – ২০শে সেপ্টেম্বর ১৯৩৩), একজন প্রাক্তন ব্রিটিশ সমাজতান্ত্রিক, ব্রহ্মজ্ঞানী, নারী অধিকার আন্দোলনকারী, লেখিকা, বাগ্মী, এবং আইরিশ ও ভারতীয় স্বায়ত্বশাসনের সমর্থক।
অ্যানি বেসান্ত | |
---|---|
জন্ম | অ্যানি উড (১৮৪৭-১০-০১)১ অক্টোবর ১৮৪৭ |
মৃত্যু | ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৩৩(1933-09-20) (বয়স ৮৫) |
জাতীয়তা | ব্রিটিশ |
পরিচিতির কারণ | ব্রহ্মজ্ঞানী, নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলন, লেখিকা এবং বাগ্মী |
রাজনৈতিক দল | ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস |
আন্দোলন | ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন |
দাম্পত্য সঙ্গী | ফ্রাংক বেসান্ত (বি. ১৮৬৭; বিচ্ছেদ. ১৮৭৩) |
সন্তান | আর্থার, মাবেল |
১৮৬৭ সালে, ২০ বছর বয়সে, অ্যানি, ফ্রাংক বেসান্তকে বিবাহ করেন। ফ্রাংক একজন ধর্মপ্রচারক ছিলেন, তাদের দুটি সন্তান ছিল। তবে, অ্যানির ক্রমবর্ধমান অচিরাচরিত ধর্মীয় মতামতের ফলে মতবিরোধ হয়ে ১৮৭৩ সালে তাদের আইনি বিচ্ছেদ ঘটে।[1] তখন তিনি ন্যাশনাল সেকুলার সোসাইটির (এনএসএস) একজন বক্তা, একজন লেখক এবং চার্লস ব্র্যাডলফ এর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠেন। ১৮৭৭ সালে, জন্ম নিয়ন্ত্রণ অভিযানকারী চার্লস নোল্টনের একটি বই প্রকাশ করে তারা অভিযুক্ত হন। এই বিতর্ক তাদের বিখ্যাত করে তোলে, এবং পরবর্তীতে, ১৮৮০ সালে, ব্র্যাডলফ নর্থাম্পটনের এমপি নির্বাচিত হন।
তারপরে, তিনি ইউনিয়নের কাজকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তার কাজের মধ্যে ছিল রক্তাক্ত রবিবার প্রদর্শন এবং ১৮৮৮ সালের লন্ডন দেশলাই কারখানা কর্মী ধর্মঘট। তিনি ফেবিয়ান সোসাইটি এবং মার্কসবাদী সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক ফেডারেশন (এসডিএফ) উভয়ের পক্ষে একজন স্বনামধন্য বক্তা ছিলেন। তিনি টাওয়ার হ্যামলেট্স এর জন্য লন্ডন স্কুল বোর্ডে নির্বাচিত হন। যদিও সেই সময়ে অল্প সংখ্যক মহিলাই ভোট দেওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হতেন, তবুও তিনি ভোট পর্বে শীর্ষস্থান লাভ করেন। ১৮৯০ সালে, বেসান্তের সঙ্গে হেলেনা ব্লাভাৎস্কির দেখা হয়, এবং পরবর্তী কয়েক বছরে ব্রহ্মজ্ঞানে তার আগ্রহ বৃদ্ধি পায়, এবং ধর্মনিরপেক্ষ বিষয়ে তার আগ্রহ কমতে থাকে। তিনি ব্রহ্মজ্ঞানী সমাজের সদস্য হন। এবং এই বিষয়ে এক জন বিশিষ্ট বক্তা হয়ে ওঠেন। তার ব্রহ্মচর্চা সম্পর্কিত কাজের অংশ হিসাবে, তিনি ভারতে আসেন। ১৮৯৮ সালে, তিনি কেন্দ্রীয় হিন্দু স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করেছিলেন],[2] এবং ১৯২২ সালে, তিনি ভারতের মুম্বইতে হায়দ্রাবাদ (সিন্ধু) জাতীয় কলেজিয়েট বোর্ড প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছিলেন।[3] ১৯০২ সালে, তিনি আন্তর্জাতিক অর্ডার অফ কো-ফ্রীম্যাসোনারি প্রথম বিদেশী লজ লা ড্রোয়া হুমাঁ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তী কয়েক বছরে তিনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অনেক অংশে লজ স্থাপন করেন। ১৯০৭ সালে তিনি ব্রহ্মজ্ঞানী সমাজের সভাপতি হন। তখন এর আন্তর্জাতিক সদর দপ্তর ছিল মাদ্রাজের আদিয়ার।
তিনি ভারতীয় রাজনীতিতেও যুক্ত হয়ে পড়েন, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করেন। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে, তিনি ভারতে গণতন্ত্রের প্রচারের জন্য এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্য মধ্যেই কর্তৃত্ব পেতে, হোম রুল লীগ চালু করতে সহায়তা করেছিলেন। এর ফলে, ১৯১৭ এর শেষের দিকে তিনি ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন। ১৯২০ এর শেষ দিকে, বেসান্ত তার আশ্রিত এবং দত্তক পুত্র জিদ্দু কৃষ্ণমূর্তিকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন, যাঁকে তিনি দাবি করেন নতুন মেসায়া এবং বুদ্ধের অবতার বলে। কৃষ্ণমূর্তি ১৯২৯ সালে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।[4] যুদ্ধ শেষে, ১৯৩৩ সালে তার মৃত্যুর আগে পর্যন্ত, তিনি ভারতীয় স্বাধীনতা এবং থিওসফির কারণগুলির জন্য প্রচার চালিয়ে যান।
তার উদ্দেশ্য পূরণের প্রধান উপায় হিসাবে তিনি বেনারসে কেন্দ্রীয় হিন্দু স্কুলটি শুরু করেন।