ইয়ান ফ্লেমিং
From Wikipedia, the free encyclopedia
ইয়ান ফ্লেমিং (ইংরেজি: Ian Fleming, পুরোনামঃ ইয়ান ল্যাংকেষ্টার ফ্লেমিং) (জন্মঃ ২৮ মে, ১৯০৮- মৃত্যুঃ ১২ অগাষ্ট ১৯৬৪) একজন বিখ্যাত ব্রিটিশ লেখক, সাংবাদিক ও নৌ-গোয়েন্দা। ব্রিটিশ কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্র জেমস বন্ড চরিত্রটি সৃষ্টির জন্য বিখ্যাত ছিলেন ফ্লেমিং। জেমস বন্ডের উপর মোট ১২ টি উপন্যাস লিখেন তিনি। ২০০৮ সালে টাইমস পত্রিকা অনুসারে ইয়ন ফ্লেমিংক “১৯৪৫ সালের পর সেরা ৫০ ব্রিটিশ লেখক”দের একজন।
ইয়ান ফ্লেমিং | |
---|---|
জন্ম | ইয়ান ল্যাংকেষ্টর ফ্লেমিং (Ian Lancaster Fleming) ২৮ মে, ১৯০৮ মেফেয়ার, লন্ডন, ইংল্যান্ড |
মৃত্যু | ১২ অগাষ্ট, ১৯৬৪ |
পেশা | লেখক ও সাংবাদিক |
জাতীয়তা | ব্রিটিশ |
সময়কাল | ১৯৫৩-১৯৬৪ |
ধরন | গোয়েন্দা লেখক, শিশুতোষ ভ্রমণ কাহিনী |
দাম্পত্যসঙ্গী | অ্যান গ্যারাল্ডিন চার্টেরিস (১৯৫২–১৯৬৪) |
পুরো নাম ইয়ান ল্যাংকেস্টার ফ্লেমিং। জন্মেছিলেন খুব নাম করা ধনী পরিবারে। পারিবারিক ভাবে যোগসূত্র ছিল রবার্ট ফ্লেমিং এন্ড কোং নামের একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সাথে। তার বাবা ১৯১০ সাল থেকে হেনলে এর সংসদ সদস্য ছিলেন এবং পরবর্তীতে ১৯১৭ সালে পশ্চিম ফ্রন্টের যুদ্ধে মৃত্যু বরণ করেন। পড়াশোনা করেছেন ইটন, স্যান্ডহার্স্ট কলেজে এবং মিউনিখ ও জেনেভার মত বিশ্ব বিদ্যালয়ে। লেখা লেখি শুরু করার আগে বেশ কয়েকটি চাকরিও করেছেন ফ্লেমিং।
দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় ব্রিটেনের নৌ বিভাগের গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করতেন। তখনই ফ্লেমিং গোল্ডেন আই অপারেশনের পরিকল্পনাতে অংশ গ্রহণ করেন এবং পাশাপাশি নেতৃত্ব দেন ৩০ এসাল্ট ইউনিট এবং টি-ফোর্স নামের দুটি গোয়েন্দা বিভাগের। যুদ্ধের সময় এই সব কাজের অভিজ্ঞতা এবং সাংবাদিকতার পেশা তার জেমস বন্ড উপন্যাসে লেখার ক্ষেত্রে ব্যাপক সহায়ক হয়েছিল।
১৯৫২ সালে ফ্লেমিং বন্ডের প্রথম উপন্যাসটি লিখেন যার নাম ছিল ক্যাসিনো রয়্যাল । বইটি ব্যাপক ভাবে সফলতা পায় এবং পাঠকদের চাহিদা পূরণের জন্য তিন তিনবার মুদ্রণে পাঠাতে হয়। ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৬৬ সালের মধ্যে তিনি একে একে লিখে ফেলেন বন্ড সিরিজের ১১ টি উপন্যাস এবং দুটি ছোট গল্পের সমগ্র। উপন্যাসের গল্প গুলো জেমস বন্ড নামের এক চরিত্র ঘিরে যে একটি গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করতো। যাকে আড়ালে আবড়ালে সবাই এম আই সিক্স নামেই চিনে। এছাড়াও ০০৭ (ডাবল ও সেভেন) বিশেষ কোডেও বন্ড সবার কাছে পরিচিত ছিল। আর পেশাগত পরিচয়ে সে ছিল রয়েল নেভাল ভলান্টিয়ার রিজার্ভ -এর কমান্ডার হিসেবে। সারা বিশ্বে প্রায় ১০ কোটি সংখ্যক বিক্রিত হওয়া বন্ড সিরিজের গল্প গুলো কাল্পনিক উপন্যাসের বইয়ের তালিকায় বেস্ট সেলিং সিরিজ। ফ্লেমিং চিট্টি-চিট্টি-ব্যাং-ব্যাং নামে বাচ্চাদের গল্পের বই এবং দুটি নন ফিকশন বই নিয়েও কাজ করেছেন। ২০১৮ সালেদ্যা টাইমস এর ক্রম অনুসারে ১৯৪৫ সাল থেকে "৫০ জন সেরা ব্রিটিশ লেখকের" মধ্যে ফ্লেমিং এর নাম ১৪ তম স্থানে জায়গা করে নেয়। ফ্লেমিং এর সৃষ্ট চরিত্রটি সিনেমার পর্দায় আসে ২৬ বার আর সে গুলোতে অভিনয় করেছেন ৭ জন নামকরা অভিনেতা।
অ্যান চার্টেলিস নামক এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন ফ্লেমিং। তবে আগে থেকেই লেখকের সাথেই প্রণয় সম্পর্কের কারণে দ্বিতীয় ভিসকাউন্ট রোদারমিয়ার তাকে তালাক দিয়েছিলেন। ফ্লেমিং এবং চার্টেলিসের একটি পুত্র সন্তান হয়। তার নাম ছিল ক্যাস্পার। ব্যক্তিগত জীবনে ফ্লেমিং ছিলেন অতিমাত্রায় ধূমপায়ী এবং মদ্যাসক্ত। আর এ বদ অভ্যাসের কারণেই হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫৬ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন ১৯৬৪ সালে। জেমস বন্ডের দুটি বই তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয় তত দিনে অন্যন্য লেখকরাও বন্ড উপন্যাস লেখা শুরু করে দিয়েছিল।