ইরাক–ইরান যুদ্ধ
From Wikipedia, the free encyclopedia
ইরান-ইরাক যুদ্ধের সূচনা হয় ১৯৮০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। জাতিসংঘের মধ্যস্ততায় ১৯৮৮ সালের আগস্টে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে এর অবসান ঘটে। ইরানের কাছে এ যুদ্ধ অন্যায়ভাবে চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ (جنگ تحمیلی, Jang-e-tahmīlī/জাংগে তাহমিলি) and পবিত্র প্রতিরোধ (دفاع مقدس, Defa-e-moghaddas/দেফা এ মাক্বাদ্দাস) হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে ইরাকের সাদ্দাম হোসেন এ যুদ্ধকে ব্যাটল অব ক্বাদেসিয়া (قادسيّة صدّام, Qādisiyyat Saddām) নামে অভিহিত করতেন।
ইরাক–ইরান যুদ্ধ | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
ইরানি ফ্রন্টে শিশু সৈন্যদের অংশগ্রহণ (উপরে বামদিকে); ইরাকি আক্রমণের সময় নিহত ইরানি বেসামরিক নাগরিকদের মৃতদেহ (উপরে ডানদিকে); ইরাকি যুদ্ধবিমান কর্তৃক ভুলক্রমে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ 'ইউএসএস স্টার্ক' আক্রমণের পর জাহাজটির চিত্র (মাঝে বামদিকে); অপারেশন মেরসাদের সময় নিহত ইরাকপন্থী পিএমওআই যোদ্ধাদের মৃতদেহ (মাঝে ডানদিকে); ইরানিরা খুররমশহর পুনর্দখল করার পর ইরাকি যুদ্ধবন্দিরা (নিচে বামদিকে); ইরানি সেনাবাহিনীর দ্বারা ব্যবহৃত জেডইউ-২৩-২ (নিচে ডানদিকে) | |||||||||
| |||||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||||
ইরান কেডিপি |
ইরাক এমইকে | ||||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||||
অন্যান্য: আবুলহাসান বনিসদর মোহাম্মদ আলী রাজাই আলী খামেনেই[35] আকবর হাশেমি রাফসানজানি মোহাম্মদ জাভেদ বাহোনার † মীর হোসেইন মৌসাভি মোস্তফা সামরান † ওয়ালিউল্লাগ ফাল্লাহি আলী সাঈদ শিরাজী জাভেদ ফাকোরি মোহাম্মদ হোসেইন মঈনপুর বাহরাম আফজালি মোহসিন রেজাই মাসুদ বারজানী জালাল তালাবানি নওশিরওয়ান মুস্তাফা মোহাম্মেদ বাকির আল-হাকিম আব্দুল আজিজ আল-হাকিম |
অন্যান্য: আলী হাসান আল-মাজিদ তাহা ইয়াসিন রমাদান ইজ্জত ইব্রাহিম আদ-দৌরি আবিদ হামিদ মানহুদ সালাহ আবুদ মাহমুদ তারেক আজিজ আদনান খাইরাল্লাহ সাদ্দাম কামেল উদে হুসেইন কুশে হুসেইন মেহের আব্দুল রাশিদ আব্দুল রহমান ঘাসেমলু মাসুদ রাজাভি মরিয়াম রাজাভি | ||||||||
শক্তি | |||||||||
যুদ্ধের শুরুতে[36] ১৯৮২ সালে ইরান থেকে ইরাকি সৈন্য প্রত্যাহারের পর: ৬,০০,০০০ সৈন্য ১,০০০টি ট্যাংক ৮০০টি সাঁজোয়া গাড়ি ৬০০টি ভারী কামান ৬০–৮০টি যুদ্ধবিমান ৭০–৯০টি হেলিকপ্টার |
যুদ্ধের শুরুতে:[40] ১৯৮২ সালে ইরান থেকে ইরাকি সৈন্য প্রত্যাহারের পর: ১৫,০০,০০০ সৈন্য ~৫,০০০টি ট্যাংক ৮,৫০০–১০,০০০টি এপিসি ৬,০০০–১২,০০০টি কামান ৯০০টি যুদ্ধবিমান ১,০০০টি হেলিকপ্টার | ||||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||||
১,২৩,২২০–১,৬০,০০০ সৈন্য নিহত এবং ৬০,৭১১ সৈন্য নিখোঁজ (ইরানি তথ্যানুযায়ী)[42][43] ২,০০,০০০–৬,০০,০০০ সৈন্য নিহত (অন্যান্য তথ্যানুযায়ী)[42][44][45][46][47][48][49][50][51] ৮,০০,০০০ সৈন্য নিহত (ইরাকি তথ্যানুযায়ী)[42] ৩,২০,০০০–৫,০০,০০০ সৈন্য আহত[45][52][53] ৪০,০০০–৪২,৮৭৫ সৈন্য যুদ্ধবন্দি[52][53] ৬২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি[44][54] |
১,০৫,০০০–৩,৭৫,০০০ সৈন্য নিহত[52][54][55][56][57] ২,৫০,০০০–৫,০০,০০০ সৈন্য নিহত (অন্যান্য তথ্যানুযায়ী)[58] ৪,০০,০০০ সৈন্য আহত[56] ৭০,০০০ সৈন্য যুদ্ধবন্দি[45][56] ৫৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি[44][54] | ||||||||
উভয় পক্ষে ১ লক্ষাধিক বেসামরিক মানুষ নিহত[59] | |||||||||
¹ ঠিক কত সংখ্যক ইরাকি শিয়া ইরানের পক্ষে লড়েছিলেন সেটা অজ্ঞাত। ইসলামিক সুপ্রিম কাউন্সিল অফ ইরাক এবং ইসলামিক দাওয়া পার্টি যুদ্ধের সময় ইরানকে সমর্থন করেছিল। ইরান কখনো কখনো ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ইরাকি যুদ্ধবন্দিদের নিয়ে ডিভিশন তৈরি করত। |
সীমান্ত বিরোধ এবং ইরাকের অভ্যন্তরে শিয়া জংগীদের ইরানি মদদ দেয়ার অভিযোগে ১৯৮০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ইরাকি বাহিনী পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই অবৈধভাবে ইরানি ভূ-খন্ড আক্রমণ এবং অণুপ্রবেশ চালায়। সদ্য ঘটে যাওয়া ইরানি ইসলামি বিপ্লবের নাজুক অবস্থাকে ব্যবহার করে ইরাক যুদ্ধে দ্রুত অগ্রগতি অর্জনের চেষ্টা চালায়। কিন্তু কার্যত সে চেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। ১৯৮২ সালের জুনের মধ্যে ইরান তার হারানো সমস্ত ভূ-খন্ড পুনরুদ্ধার করতে সমর্থ হয়। এর পরের ৬ বছর ইরানি বাহিনী যুদ্ধে অগ্রসর ভূমিকায় ছিল। [61] জাতিসংঘের বারবার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ১৯৮৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হয় । ২০০৩ সালে দু'দেশের মধ্যে সর্বশেষ যুদ্ধবন্দীর বিনিময় ঘটে।[62][63]
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কৌশলের সাথে এ যুদ্ধের বেশ মিল খুঁজে পাওয়া যায় । পরিখা, কাঁটাতার, মানব স্রোত, বেয়নেট চার্জ এ যুদ্ধে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ইরাকি বাহিনী ইরানি সৈন্য, বেসামরিক নাগরিক এবং ইরাকি কুর্দিদের উপর রাসায়নিক গ্যাস এবং মাস্টারড গ্যাস প্রয়োগ করে।