ব্যাকট্রিয়া
মধ্য এশিয়ার একটি ঐতিহাসিক স্থান / From Wikipedia, the free encyclopedia
ব্যাকট্রিয়া (/ˈbæktriə/; ব্যাকট্রিয়া: βαχλο, বাখ়লো), বা ব্যাকট্রিয়ানা ছিলো মধ্য এশিয়ার একটি প্রাচীন অঞ্চল।[1] ব্যাকট্রিয়ার সঠিক অবস্থান ছিল হিন্দুকুশ পর্বতমালার উত্তরে এবং আমু দরিয়া নদীর দক্ষিণে, যা আধুনিক-আফগানিস্তানের উত্তরাংশ, তাজিকিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাংশ এবং উজবেকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলো।[2] আরও বৃহত্তরভাবে ব্যাকট্রিয়া ছিল হিন্দু কুশের উত্তরে, পামিরের পশ্চিমে এবং তিয়ানশির দক্ষিণে, আমু দরিয়া মাঝখান দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়েছিল।
ব্যাকট্রিয়া বাল্খ | |
---|---|
হাখমানেশি সাম্রাজ্য, সিলিউসিড সাম্রাজ্য, গ্রিকো-ব্যাকট্রীয় রাজ্য এবং ইন্দো-গ্রীক রাজ্য প্রদেশ | |
২৫০০/২০০০ খ্রিস্টপূর্ব–৯০০/১০০০ খ্রিস্টাব্দ | |
রাজধানী | ব্যাকট্রা |
ঐতিহাসিক যুগ | Antiquity |
• প্রতিষ্ঠিত | ২৫০০/২০০০ খ্রিস্টপূর্ব |
• বিলুপ্ত | ৯০০/১০০০ খ্রিস্টাব্দ |
আবেস্তায় অঞ্চলটিকে "অনিন্দ্য ব্যাকট্রিয়া, পতাকাসমেত মুকুটপরিহিত" এবং সর্বোচ্চ দেবতা আহুরা মাজদা যে ষোলটি নিখুঁত ইরানি ভূমি তৈরি করেছিলেন সেগুলির মধ্যে একটি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি জরাথুস্ট্রবাদের প্রাথমিক কেন্দ্রগুলির একটি এবং ইরানের কিংবদন্তি কায়ানীয় রাজত্বের রাজধানী। ব্যাকট্রিয়াকে মহান দারিয়াস-এর বেহিসতুন শিলালিপিতে হাখমানেশি সাম্রাজ্যের অন্যতম সত্রপ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে; এটি ছিলো একটি বিশেষ সত্রপ যা রাজমুকুটপ্রাপ্ত অধিপতি বা অভিপ্রেত উত্তরাধিকারীদের দ্বারা শাসিত হতো। খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে হাখমানেশি সাম্রাজ্যের পতনের পরে ম্যাসেডোনিয়ার আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে ইরানের প্রতিরোধের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ব্যাকট্রিয়া, তবে শেষ পর্যন্ত গ্রেট আলেকজান্ডারের পতন ঘটে। ম্যাসেডোনীয় বিজয়ীর মৃত্যুর পরে, ব্যাকট্রিয়া তার সেনাপতি প্রথম সিলিউকাস দ্বারা অধিকৃত হয়।
তা সত্ত্বেও, ব্যাকট্রিয়ার সত্রপ ডায়োডোটাস প্রথম কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণার পরে অঞ্চলটি হারিয়েছিলেন সেনাপতি সেলুসিড; এভাবে গ্রিকো-ব্যাকট্রিয়ান এবং পরবর্তীকালে ইন্দো-গ্রীক রাজ্যের ইতিহাস শুরু হয়েছিল। খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দীর মধ্যে ইরানি পার্থিয়ান সাম্রাজ্য দ্বারা দখলকৃত হয় ব্যাকট্রিয়া এবং ১ম শতাব্দীর গোড়ার দিকে ব্যাকট্রিয়া অঞ্চলগুলোতে ইউয়েজি কর্তৃক কুষাণ সাম্রাজ্য দ্বারা গঠিত হয়েছিল। ইরানের রাজাদের মধ্যে দ্বিতীয় সাসানীয় মহারাজা শাপুর প্রথম তৃতীয় শতাব্দীতে কুষাণ সাম্রাজ্যের পশ্চিম অংশগুলি জয় করেছিলেন এবং কুষাণ-সাসানিয়ান রাজ্য গঠিত হয়েছিল। ৪র্থ শতাব্দীতে সাসানিয়ানরা ব্যাকট্রিয়ার দখল হারায়, তবে ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে পুনরায় দখল করেছিল। ৭ম শতকে ইরানের মুসলিম বিজয়ের সাথে সাথে ব্যাকট্রিয়ার ইসলামীকরণ শুরু হয়।
৮ম এবং ৯ম শতাব্দীতে ব্যাকট্রিয়া ছিলো একটি ইরানি রেনেসাঁ বা নবজাগরণের কেন্দ্র [3]এবং অঞ্চলটিতে একটি স্বতন্ত্র সাহিত্যিক ভাষা হিসাবে নতুন ফারসি ভাষার আবির্ভাব ঘটে এই সময়ে। ব্যাকট্রিয়ার পূর্ব ইরানে পারস্যের সামান খুদার বংশধরদের দ্বারা গঠিত হয়েছিল সামানি সাম্রাজ্য; ফলশ্রুতিতে এই অঞ্চলে ফার্সি ভাষার বিস্তার এবং ব্যাকট্রিয়ান ভাষার অবনতি শুরু হয়।
প্রাচীন এবং মধ্যযুগীয় সময়ে ব্যাকট্রিয়া ছিলো ব্যাকট্রিয়া ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোর সাধারণ ও প্রচলিত ভাষা। ইসলাম ধর্মের উত্থানের পূর্বে জরাথ্রুস্টবাদ এবং বৌদ্ধধর্মই ছিল বেশিরভাগ ব্যাকট্রিয়ানের ধর্ম।