মৈত্রেয়ী
প্রাচীন ভারতীয় দার্শনিক / From Wikipedia, the free encyclopedia
মৈত্রেয়ী (নামের অর্থ: "বন্ধুভাবাপন্না"[1]) ছিলেন প্রাচীন ভারতের পরবর্তী বৈদিক যুগের একজন দার্শনিক। বৃহদারণ্যকোপনিষদ্ অনুযায়ী,[2] তিনি ছিলেন বৈদিক ঋষি যাজ্ঞবল্ক্যের দুই পত্নীর অন্যতমা। ঋষি যাজ্ঞবল্ক্য আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৮ম শতাব্দীতে বর্তমান ছিলেন। হিন্দু মহাকাব্য মহাভারত ও গৃহ্যসূত্রে অবশ্য তাকে এক চিরকুমারী অদ্বৈতবাদী দার্শনিক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যে তিনি এক "ব্রহ্মবাদিনী" (বেদের ব্যাখ্যাকর্ত্রী) হিসেবে পরিচিতা।
একাধিক প্রাচীন ভারতীয় গ্রন্থে মৈত্রেয়ীর উল্লেখ পাওয়া যায়। বৃহদারণ্যকোপনিষদ্ গ্রন্থে যাজ্ঞবল্ক্যের সঙ্গে কথোপকথনের মাধ্যমে তিনি হিন্দু দর্শনের আত্মা-সংক্রান্ত ধারণাটি পর্যালোচনা করেছেন। এই কথোপকথন অনুসারে, ব্যক্তির আত্মা থেকে প্রেম উৎসারিত হয়। মৈত্রেয়ী আত্মা ও ব্রহ্মের প্রকৃতি এবং সেই দুইয়ের একতা আলোচনা করেছেন। এই ধারণাটিই অদ্বৈত দর্শনের মূল কথা। বৃহদারণ্যকোপনিষদ্ গ্রন্থের এই মৈত্রেয়ী-যাজ্ঞবল্ক্য সংবাদই সুরেশ্বরের বার্ত্তিক টীকার মূল বিষয়বস্তু।
বৈদিক যুগে নারীজাতি যে শিক্ষার সুযোগ লাভ করে দার্শনিক সমাজে খ্যাতি অর্জনে সক্ষম হতেন, তার উদাহরণ হিসেবে মৈত্রেয়ীর নাম উল্লেখ করা হয়। তাকে ভারতীয় বিদূষীদের এক প্রতীক মনে করা হয়। নতুন দিল্লিতে মৈত্রেয়ীর সম্মানে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তার নামে নামাঙ্কিত করা হয়েছে।