সাধারণ আপেক্ষিকতার ভূমিকা
আলবার্ট আইনস্টাইনের মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্ব / From Wikipedia, the free encyclopedia
সাধারণ আপেক্ষিকতা মহাকর্ষের একটি তত্ত্ব। ১৯০৭ থেকে ১৯১৫ সালের মধ্যে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন এটি প্রবর্তন করেন। এই তত্ত্বে বলা হয়েছে, দুই বা ততোধিক ভরের মধ্যে পর্যবেক্ষণকৃত মহাকর্ষের কারণ হল, তারা নিজেদের ভরের মাধ্যমে আশেপাশের স্থান-কালকে বাঁকিয়ে দেয়। ব্যাপারটি অনেকটা টানটান করে বেঁধে রাখা একটি চাদরের মাঝখানে একটি বেশ ভারী পাথর রেখে দেয়ার মত। পাথর রাখার কারণে চাদরের কেন্দ্রভাগে একটি বক্রতার সৃষ্টি হয়। এখন চাদরের উপর অপেক্ষাকৃত কম ভরের আরেকটি পাথর রাখলে তা কেন্দ্রের দিকে ঝুঁকে পড়বে বা পড়ে যেতে চাইবে। দেখা যাচ্ছে বেশি ভরের পাথরের মাধ্যমে সৃষ্ট বক্রতার কারণে কম ভরের পাথরটি তার দিকে টান অনুভব করছে। মহাবিশ্বের ক্ষেত্রে এই চাদরটিই হল স্থান-কালের জালিকা। একটি বস্তুর কারণে এই জালিকায় সৃষ্ট বক্রতাই মহাকর্ষের কারণ। আইজাক নিউটন মহাকর্ষ বলকে বস্তুসমূহের মধ্যে একটি আকর্ষণ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। কিন্তু আইনস্টাইনের এই বক্তব্য ছিল আরও সঠিক। তাছাড়া এটি মহাকর্ষীয় তরঙ্গের মত আকর্ষণীয় ঘটনার ভবিষ্যদ্বাণী করে।
- এটি সকলের বোঝার জন্য সহজ করে লিখা। মূল নিবন্ধের জন্য দেখুন - সাধারণ আপেক্ষিকতা
সাধারণ আপেক্ষিকতা বেশ কিছু ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার জন্য দায়ী যেগুলো নিউটনের সূত্র দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়না। যেমন, বুধসহ অন্যান্য গ্রহের কক্ষপথের মিনিট ব্যত্যয়। তাছাড়া এটি আলো বাঁকিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া এবং সময় ধীরকরণসহ এ ধরনের অনেক ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম হয়েছিল যা পরবর্তীতে প্রমাণিত হয়েছে। সাধারণ আপেক্ষিকতা মহাকর্ষের একমাত্র আপেক্ষিকতাভিত্তিক সূত্র না হলেও এটিই সরলতম এবং পর্যবেক্ষণের সাথে সবচেয়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ। অবশ্য কয়েকটি প্রশ্ন থেকেই যায়। সবচেয়ে গুরুত্র প্রশ্নটি হচ্ছে, কীভাবে সাধারণ আপেক্ষিকতাকে কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের সাথে একত্রিত করে কোয়ান্টাম মহাকর্ষের একটি সম্পূর্ণ স্বতঃপ্রবৃত্ত সূত্র নির্ণয় করা যায়?
মহাকর্ষের মাধ্যমে আলোর বেঁকে যাওয়ার কারণে মহাকাশে একটি মজার ঘটনা পরিদৃষ্ট হয়, একটিমাত্র জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তুর একাধিক বিম্ব। এই ঘটনাকে বলে মহাকর্ষীয় লেন্সিং যা জ্যোতির্বিজ্ঞানে গুরুত্বের সাথে পঠিত হয়। লিগো এবং জিও ৬০০ প্রকল্পের অনেক বিজ্ঞানীই মহাকর্ষীয় তরঙ্গের সরাসরি প্রমাণ পেয়েছেন। কৃষ্ণ বিবর থেকে নির্গত মহাকর্ষীয় তরঙ্গ অধ্যয়নের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা আদি মহাবিশ্বের গঠন বিষয়ে সম্যক ধারণা অর্জন করতে পারেন। এছাড়া সাধারণ আপেক্ষিকতা ভৌত বিশ্বতত্ত্বের মহা বিস্ফোরণ তত্ত্বের মৌলিক ভিত্তি।