ব্রেইল পদ্ধতি
দৃষ্টিহীনদের জন্যে লিখন সামগ্রী / From Wikipedia, the free encyclopedia
ব্রেইল পদ্ধতি (/breɪl/; ফরাসি : [bʁaj]) কাগজের ওপর ছয়টি বিন্দুকে ফুটিয়ে তুলে লিখবার একটি পদ্ধতি। দৃষ্টিহীন ব্যক্তিরা এই উন্নীত বা উত্তল বিন্দুগুলোর ওপর আঙ্গুল বুলিয়ে ছয়টি বিন্দুর নকশা অনুযায়ী কোনটি কোন্ অক্ষর তা’ অনুধাবন করতে সক্ষম হয় এবং লেখার অর্থ বুঝতে পারে। ছয়টি বিন্দুর কোনোটিকে উন্নত করে আর কোনোটিকে উন্নত না-করে ৬৩টি নকশা তৈরী করা যায়। এক-একটি নকশা দিয়ে এক-একটি অক্ষর, সংখ্যা বা যতিচিহ্ন বোঝানো হয়। ৬টি বিন্দু বাম ও ডান দুটি উল্লম্ব স্তম্ভে সজ্জিত থাকে। অর্থাৎ প্রতি আনুভূমিক সরিতে থাকে দুটি বিন্দু। বিন্দুগুলোর পরস্পরের আকার ও অন্তর্তী দূরত্ব থাকে অভিন্ন। যেমন, যদি কেবল বাম স্তম্ভের ওপরের বিন্দুটি উত্তল থাকে আর বাকী ৫টি থাকে সমতল, তবে এ নকশাটি দ্বারা ইংরেজি বর্ণমালার a অক্ষর বোঝায়। রন্ধ্রযুুক্ত ধাতব পাত ব্যবহার করের সাহায্যে হাতে বিশেষ ধরনের কাগজের ওপর ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখা যায়। বিকল্পে একটি বিশেষায়িত টাইপরাইটার ব্যবহার করা হয়।
ব্রেইল লিখন পদ্ধতি | |
---|---|
লিপির ধরন | (লিখন পদ্ধতি) |
সৃষ্টিকারী | লুই ব্রেইল |
সময়কাল | ১৮২১ থেকে বর্তমান |
লেখার দিক | বাম-থেকে-ডান |
ভাষাসমূহ | একাধিক |
সম্পর্কিত লিপি | |
উদ্ভবের পদ্ধতি | নৈশ লিখন পদ্ধতি
|
বংশধর পদ্ধতি | ফরাসী ব্রেইল ইংরেজি ব্রেইল ভারতী ব্রেইল চীনা ব্রেইল জাপানী ব্রেইল কোরীয় ব্রেইল অন্যান্য |
ভগিনী পদ্ধতি | নিউ ইয়র্ক পয়েন্ট |
আইএসও ১৫৯২৪ | |
আইএসও ১৫৯২৪ | Brai, 570 , ব্রেইল |
ইউনিকোড | |
ইউনিকোড উপনাম | ব্রেইল |
ইউনিকোড পরিসীমা | U+2800 to U+28FF |
এই নিবন্ধে আধ্বব চিহ্ন রয়েছে। সঠিক রেন্ডারিং সমর্থন ছাড়া, আপনি হয়ত ইউনিকোড অক্ষরের বদলে জিজ্ঞাসা চিহ্ন, বাক্স বা অন্য কোনো চিহ্ন দেখবেন। |
ব্রেইল কোনো ভাষা নয়। এটি একটি লিখবার পদ্ধতি। দৃষ্টিহীনদের লেখা-পড়ার স্বার্থে যে ব্যক্তি এ পদ্ধতিটি আবিষ্কার করেছিলেন তার নাম লুই ব্রেইল। তার জন্ম ১৮০৯ সালে। দৃষ্টিহীন এই ফরাসী বালক মাত্র পনের বৎসর বয়সে লেখার ও সহজে পাঠযোগ্য এই পদ্ধতিটি আবিষ্কার করেছিলেন। চার্লস বারবিয়ে কর্তৃক উদ্ভাবিত যুদ্ধকালীন সময়ে রাত্রিবেলায় পড়ার জন্য যে উত্তল অক্ষরের প্রচলন ছিল তা পর্যবেক্ষণ করে লুই ব্রেইল কাগজে উত্তল বিন্দু ফুটিয়ে লেখার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন। তার নামেই এই পদ্ধতি পরিচিত।[1] পরবর্তীতে ১৮২৯ সালে তিনি স্বরলিপি পদ্ধতিতেও প্রকাশ করেন।[2] ১৮৩৭ সালে প্রকাশিত দ্বিতীয় সংস্করণটি ছিল আধুনিক যুগে বিকশিত প্রথম ক্ষুদ্র বাইনারি লিখন পদ্ধতি।
ঐতিহ্যগতভাবে এটি কাগজে এম্বোজকৃতভাবে লিখা হয়। ব্রেইলার এক ধরনের টাইপ মেশিন যাতে ছয়টি বিন্দুুর জন্য ছয়টি বাটন, স্পেস বার, ক্যাপিটাল লেটার ও সংখ্যা বোঝানোর জন্য পৃথক দুটি বাটন থাকে। ব্যাাকস্পেইস ও পরের লইনে যাওয়ার জন্যও পৃথক বাটন থাকে। ব্রেইল টাইপ রাইটারে শক্ত ধরনের কাগজ ব্যবহার করা হয় যাতে স্ফুটিত অক্ষরগুলো সহজে ভেঙ্গে না যায়। সাধারণত ১৪০ থেকে ১৬০ জিএসএম-এর কাগজ ব্যবহৃত হয়।
ব্রেইল ব্যবহারকারীরা রিফ্রেশ্যাবল ব্রেইল ডিসপ্লে ব্যবহারের মাধ্যমে কম্পিউটারের পর্দা ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক সমর্থনযোগ্য ডিভাইসে পড়তে পারে। তারা স্লেট এন্ড স্টাইলাসের মাধ্যমে লিখতে বা পোর্টেবল ব্রেইল নোটটেকার বা কম্পিউটারের মাধ্যমে ব্রেইল রাইটারে টাইপ করতে পারে।