আলবেনিয়া
দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপে বলকান উপদ্বীপে অবস্থিত প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র / From Wikipedia, the free encyclopedia
আলবেনিয়া (আলবেনীয় ভাষায়: Shqipëri শ্চিপ্যরি) দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের বলকান উপদ্বীপের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র। দেশটি পশ্চিম দিক থেকে আদ্রিয়াতিক সাগর এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে আইওনীয় সাগর দ্বারা পরিবেষ্টিত; উপকূলীয় তটরেখার দৈর্ঘ্য ৩৬২ কিলোমিটার। দেশটির পূর্ণ সরকারি নাম আলবেনিয়া প্রজাতন্ত্র। আলেবেনীয় ভাষার দেশটির নাম "শ্চিপ্যরি", যার অর্থ "ঈগলদের দেশ"। এর রাজধানী ও বৃহত্তম নগরীর নাম তিরানা। এখানে প্রায় ২৯ লক্ষ লোক বাস করে। দেশটির আয়তন ২৮৭৪৮ বর্গকিলোমিটার । জনঘনত্ব প্রতি বর্গমাইলে ২৭৪ জন। দুই সাগরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এই দেশটির ৭০ শতাংশ ভূমিই খুব বন্ধুর। দেশটির সর্বোচ্চ স্থান দিবারের কোরাব সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২,৭৫৩ মিটার ওপরে অবস্থিত।[12] আলবেনিয়াতে আদ্রিয়াতিক সাগরের তীরে একটি সরু উপকূলীয় সমভূমি অবস্থিত। দেশের অভ্যন্তরভাগ মূলত পাহাড়-পর্বতে পূর্ণ। দেশের প্রায় ৪০% অংশ অরণ্য ও স্ক্রাবে আবৃত। দেশটির জলবায়ু ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলীয় প্রকৃতির। গ্রীষ্মকালগুলি উষ্ণ এবং শীতকালগুলি শীতল। পার্বত্য অঞ্চলে শীতকালে বৃষ্টি বা তুষারপাত হয়।
আলবেনিয়া প্রজাতন্ত্র Republika e Shqipërisë(আলবেনীয়) রেপুব্লিকা এ শ্চিপ্যরিস | |
---|---|
নীতিবাক্য: (দাপ্তরিক)
| |
জাতীয় সঙ্গীত:
| |
রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি | তিরানা |
সরকারি ভাষা | আলবেনীয়a |
নৃগোষ্ঠী | |
সরকার | ঐক্যমূলক সংসদীয় প্রজাতন্ত্র |
• রাষ্ট্রপতি | বাজরাম বেগাজ |
• প্রধানমন্ত্রী | ইদি রামা |
• সংসদের স্পিকার | লিন্দিতা নিকোলা |
আইন-সভা | সংসদ |
স্থাপন | |
• অটোমান সাম্রাজ্য হতে স্বাধীনতা | ২৮শে নভেম্বর ১৯১২ |
• মহান ক্ষমতা দ্বারা স্বীকৃত | ২৯শে জুলাই ১৯১৩ |
• বর্তমান সংবিধান | ২৮শে নভেম্বর ১৯৯৮ |
আয়তন | |
• মোট | ২৮,৭৪৮ কিমি২ (১১,১০০ মা২) (143rd) |
• পানি (%) | ৪.৭ 2,876,591[7] |
জনসংখ্যা | |
• 2011 আদমশুমারি | 2,821,977[8] |
• ঘনত্ব | ৯৮/কিমি২ (২৫৩.৮/বর্গমাইল) (63rd) |
জিডিপি (পিপিপি) | 2018 আনুমানিক |
• মোট | $38.154 billion[9] |
• মাথাপিছু | $13,274[9] |
জিডিপি (মনোনীত) | 2018 আনুমানিক |
• মোট | $15.289 billion[9] |
• মাথাপিছু | $5,319[9] |
জিনি (2013) | 34.5[10] মাধ্যম |
মানব উন্নয়ন সূচক (2015) | 0.764[11] উচ্চ |
মুদ্রা | লেক (ALL) |
সময় অঞ্চল | ইউটিসি+১ (কেইস (সিইউটি)) |
ইউটিসি+২ (কেউগ্রীস (সিইউডিটি)) | |
তারিখ বিন্যাস | দিদি.মামা.বববব |
গাড়ী চালনার দিক | ডানপার্শ্ব |
কলিং কোড | ৩৫৫ |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | AL |
ইন্টারনেট টিএলডি | .al |
|
আলবেনিয়া ইতিহাসে বহুবার পূর্বের ইতালীয় শক্তি ও পশ্চিমের বলকান শক্তির কাছে নত হয়েছে। ১৫শ শতকে আলবেনিয়া উসমানীয় সাম্রাজ্যের অধীনে আসে এবং শেষ পর্যন্ত ১৯১২ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। ইস্কান্দর বে আলবেনীয় জাতির পিতা হিসেবে পরিচিত। ১৯৪৪ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এটি একটি সাম্যবাদী রাষ্ট্র ছিল। ১৯৯১ সালে দেশটি গণতন্ত্র ও বাজার অর্থনীতি ব্যবস্থায় ধীরে ধীরে রূপান্তর শুরু করে এবং পূর্ব ইউরোপের সর্বশেষ দেশ হিসেবে অর্থনীতির উদারীকরণ সম্পন্ন করে। ১৯৯০-এর দশকে দেশটিতে আঞ্চলিক সংঘাতের কারণে দেশটির জীবনযাত্রায় সমস্যার সৃষ্টি করেছে।
দেশটির অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও বিচারবিভাগীয় সংস্কারের গতি অত্যন্ত মন্থর। দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে ২০১৪ সালে প্রার্থী হয়। একসময় আলবেনিয়া বিশ্বের একমাত্র সরকারীভাবে নাস্তিক রাষ্ট্র ছিল। বর্তমানে এখানে আবার মসজিদ ও গির্জা খুলেছে। দেশের দক্ষিণভাগে অবস্থিত সংখ্যালঘু গ্রিক সম্প্রদায়ের লোকেরা প্রচুর বৈষম্যের শিকার। আলবেনিয়ার জনগণ আলবেনীয় ভাষাতে কথা বলে, যা দেশটির সরকারি ভাষা। এছাড়া গ্রিক ভাষার প্রচলন আছে। দেশের ৬৮% জনগণ সুন্নি মতাদর্শের ইসলাম ধর্মাবলম্বী। ১২% লোক ক্যাথলিক মণ্ডলীর খ্রিষ্টান, ৮% আলবেনীয় প্রথানুবর্তী খ্রিষ্টান এবং ৬% অধার্মিক। জাতিগতভাবে ৯৮% আলবেনীয় জাতির লোক এবং ১% গ্রিক। এখানে একটি সংসদীয় শাসনব্যবস্থা বিদ্যমান।
আলবেনিয়ার অবকাঠামো খুবই প্রাথমিক পর্যায়ের। বিদেশি বিনিয়োগও কম। সংগঠিত অপরাধীরা দেশের একটি বড় সমস্যা। তবে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ অর্থনীতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। দেশটির মুদ্রার নাম লেক; ১ লেক ১০০ কিনদার্কার সমান।