আল-আকসা মসজিদ
মুসলমানদের প্রথম কিবলা / From Wikipedia, the free encyclopedia
আল–আকসা মসজিদ ( আরবি: ٱلْـمَـسْـجِـد الْاَقْـصَى, প্রতিবর্ণীকৃত: আল-মাসজিদ আল-আকসা), মসজিদুল আকসা বা বাইতুল মুকাদ্দাস [4][5] হলো জেরুসালেমের পুরনো শহরে অবস্থিত ইসলামের ৩য় পবিত্রতম মসজিদ [6][7] এবং এর সাথে একই প্রাঙ্গণে কুব্বাত আসসাখরা, কুব্বাত আসসিলসিলা ও কুব্বাত আন নবী নামক স্থাপনাগুলো অবস্থিত। স্থাপনাগুলো সহ এই পুরো স্থানটিকে হারাম আল শরিফ বলা হয়।[8][9][10][11] এছাড়াও স্থানটি "টেম্পল মাউন্ট" বলে পরিচত এবং ইহুদি ধর্মে পবিত্র বলে বিবেচিত হয়। ইসলামের বর্ণনা অনুযায়ী মুহাম্মদ (সা) মিরাজের রাতে মসজিদুল হারাম থেকে আল-আকসা মসজিদে এসেছিলেন এবং এখান থেকে তিনি ঊর্ধ্বাকাশের দিকে যাত্রা করেন।[12][13][14] ইতিহাসবিদ পণ্ডিত ইবনে তাইমিয়ার মতে, আসলে সুলায়মান এর তৈরি সম্পূর্ণ উপাসনার স্থানটির নামই হল মসজিদুল আল-আকসা।[15] মুহাদ্দিসগণ (হাদিস বিষয়ে পণ্ডিত) এই বিষয়ে একমত যে সম্পূর্ণ উপাসনার স্থানটিই ইসলামের নবী সুলাইমান (আলাইহিস সালাম) তৈরি করেছিলেন যা পরবর্তীতে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।[16] মুসলমানরা বিশ্বাস করে, নির্মাণের পর থেকে এটি ঈসা (আঃ) (খ্রিস্টধর্মে যিশু) সহ অনেক নবীর দ্বারা এক আল্লাহকে উপাসনার স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে।[17][18][19] এই স্থান মুসলিমদের প্রথম কিবলা (প্রার্থনার দিক)।[20][21][22] হিজরতের পর কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণে কাবা নতুন কিবলা হয়।[23] বর্তমানে "আল-আকসা" মসজিদ বলতে বোঝায় কিবলি মসজিদ, মারওয়ানি মসজিদ ও বুরাক মসজিদ (৩টির) এর সমন্বয় [24] যা "হারাম আল শরীফ" এর চার দেয়াল এর মধ্যেই অবস্থিত।[25]
মসজিদ আল-আকসা | |
---|---|
বাইতুল মুকাদ্দাস | |
স্থানাঙ্ক: ৩১.৭৭৬১৭° উত্তর ৩৫.২৩৫৮৩° পূর্ব / 31.77617; 35.23583 | |
অবস্থান | জেরুসালেমের পুরনো শহর |
প্রতিষ্ঠিত | ৭০৫ সালে |
শাখা/ঐতিহ্য | ইসলাম |
প্রশাসন | জেরুসালেম ইসলামি ওয়াকফ |
পরিচালনা |
|
স্থাপত্য তথ্য | |
ধরন | প্রাথমিক ইসলামি, মামলুক |
ধারণক্ষমতা | ৫,০০০+ |
দৈর্ঘ্য | ২৭২ ফুট |
প্রস্থ | ১৮৪ ফুট |
আবৃত স্থান | ১,৪৪,০০০ বর্গমিটার (১৫,৫০,০০০ বর্গফুট)[1][2] |
গম্বুজ | ২টি বৃহৎ + দশটি ছোট |
মিনার | ৪ |
মিনারের উচ্চতা | ৩৭ মিটার (১২১ ফু) (শীর্ষতম) |
ভবনের উপকরণ | চুনাপাথর (বাইরের দেয়াল, মিনার, বহির্ভাগ), স্বর্ণ, সীসা ও পাথর (গম্বুজ), সাদা মার্বেল (ভেতরের স্তম্ভ) এবং মোজাইক[3] |
খলিফা উমর বর্তমান মসজিদের স্থানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। পরবর্তীকালে উমাইয়া খলিফা আবদুল মালিকের যুগে মসজিদটি পুনর্নির্মিত ও সম্প্রসারিত হয়। এই সংস্কার ৭০৫ খ্রিষ্টাব্দে তার পুত্র খলিফা প্রথম আল ওয়ালিদের শাসনামলে শেষ হয়। ৭৪৬ খ্রিষ্টাব্দে ভূমিকম্পে মসজিদটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে আব্বাসীয় খলিফা আল মনসুর এটি পুনর্নির্মাণ করেন। পরে তার উত্তরসুরি আল মাহদি এর পুনর্নির্মাণ করেন। ১০৩৩ খ্রিষ্টাব্দে আরেকটি ভূমিকম্পে মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ফাতেমীয় খলিফা আলি আজ-জাহির পুনরায় মসজিদটি নির্মাণ করেন যা বর্তমান অবধি টিকে রয়েছে।[26]
বিভিন্ন শাসকের সময় মসজিদটিতে অতিরিক্ত অংশ যোগ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে গম্বুজ, আঙ্গিনা, মিম্বর, মিহরাব, অভ্যন্তরীণ কাঠামো। ১০৯৯ খ্রিষ্টাব্দে ক্রুসেডাররা জেরুসালেম দখল করার পর তারা মসজিদটিকে একটি প্রাসাদ এবং একই প্রাঙ্গণে অবস্থিত কুব্বাত আস সাখরাকে গির্জা হিসেবে ব্যবহার করত। সুলতান সালাহউদ্দিন জেরুসালেম পুনরায় জয় করার পর মসজিদ হিসেবে এর ব্যবহার পুনরায় শুরু হয়। আইয়ুবী, মামলুক, উসমানীয়, সুপ্রিম মুসলিম কাউন্সিল ও জর্ডানের তত্ত্বাবধানে এর নানাবিধ সংস্কার করা হয়। বর্তমানে পুরনো শহর ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তবে মসজিদটি জর্ডানি/ফিলিস্তিনি নেতৃত্বাধীন ইসলামি ওয়াকফের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।[27]