ত্রিশ বছরের যুদ্ধ
From Wikipedia, the free encyclopedia
ত্রিশ বছরের যুদ্ধ (ইংরেজি ভাষায়: Thirty Years' War) (১৬১৮ - ১৬৪৮) প্রধানত জার্মানিতে সংঘটিত হয়েছিল যদিও বিভিন্ন সময়ে ইউরোপের প্রায় সকল দেশই এর সাথে কোন না কোনভাবে যুক্ত ছিল। এটি ইউরোপের ইতিহাসে দীর্ঘতম এবং সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ। ৩০ বছর ধরে একটানা চলা এই যুদ্ধকে পৃথিবীর আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ যুদ্ধ হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।
৩০ বছরের যুদ্ধ | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
জাক কাল্লোটের অঙ্কিত লে গ্র্যান্দেস মিসেরেস দে লা গেরে (যুদ্ধের অসহনীয় দুর্দশা), ১৬৩২। | |||||||
| |||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||
প্রোটেস্ট্যান্ট রাষ্ট্র ও মিত্রবৃন্দ
সুইডেন |
রোমান ক্যাথলিক রাষ্ট্র ও মিত্রবৃন্দ
পুণ্য রোমান সম্রাজ্য[6] স্পেন ও তার অধিকৃতরা | ||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||
গুস্তাভুস II এডোলফুস † |
ইয়োহান সেক্লেস, কাউন্ট অফ টিলি † | ||||||
শক্তি | |||||||
৬৬১,০০০ যোদ্ধা:
|
৪৫০,০০০ যোদ্ধা:
| ||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||
৮,০০০,০০০, বেসামরিক মানুষ সহ।[9] |
টেমপ্লেট:Campaignbox Palatinate campaign
টেমপ্লেট:Campaignbox Anglo–Spanish War (1625–1630)যুদ্ধের উৎপত্তি এবং অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু বলা বেশ কঠিন এবং একটিমাত্র বিষয়কে যুদ্ধের কারণ হিসেবে আখ্যায়িত করাও যায় না। প্রাথমিকভাবে এটি ছিল পুণ্য রোমান সম্রাজ্যের প্রোটেস্ট্যান্ট এবং ক্যাথলিকদের মধ্যকার একটি ধর্মযুদ্ধ যদিও সম্রাজ্যের মধ্যকার রাজনীতি নিয়ে বিরোধ এবং শক্তির ভারসাম্যেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাতে। ধীরে ধীরে এটি আরও সাধারণ যুদ্ধে রূপ নেয় যাতে ইউরোপের অধিকাংশ শক্তি অংশ নিতে বাধ্য হয়।[10][11] এই সাধারণ পর্যায়ে যুদ্ধে ধর্মের চেয়েও অনেক বড় হয়ে দেখা দেয় ইউরোপের প্রধান শক্তি হওয়ার জন্য ফ্রান্স-হাবসবুর্গ বিরোধ যার ফলশ্রুতিতে ফ্রান্স ও হাবসবুর্গ শক্তির মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়।[12]
ত্রিশ বছরের যুদ্ধের একটি বড় প্রভাব ছিল অনেক বড় বড় অঞ্চল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাওয়া যার কারণ ছিল তথাকথিত বেল্লুম সে ইপসুম আলেত (Bellum se ipsum alet), অর্থাৎ অধিকৃত অঞ্চলের মানুষদের সম্পত্তি দিয়ে সৈন্যদের ভরণপোষণ ও যুদ্ধ অর্থায়ন। লাতিন ভাষায় বেল্লুম সে ইপসুম আলেত এর অর্থ "যুদ্ধ নিজেই নিজের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে"। দুর্ভিক্ষ ও রোগশোক বোহেমিয়া, নিম্ন অঞ্চলসমূহ এবং ইতালির মত অঞ্চলগুলোর জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছিল। দেউলিয়া হয়েছিল যুদ্ধরত অধিকাংশ শক্তি। প্রতিটি সেনাবাহিনীর মধ্যকার রেজিমেন্টগুলো ভাড়াটে ছিল না অর্থাৎ অর্থের জন্য তারা দল পরিবর্তন করতো না, কিন্তু রেজিমেন্টের মধ্যকার সৈন্যদের অধিকাংশই ছিল ভাড়াটে। তাছাড়া সে সময়কার সেনাবাহিনীর অর্থায়নের প্রক্রিয়ার কারণে নিয়মানুবর্তিতার ঘাটতি ঘটেছিল। তখন সেনাবাহিনীগুলোর অর্থ আসতো মূলত লুট করা সম্পত্তি এবং অধিকৃত অঞ্চল থেকে জোরপূর্বক আদায়কৃত সম্মানী থেকে। এ কারণে অধিকৃত অঞ্চলের মানুষদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল। যুদ্ধের অনেকটা সময় ধরে কিছু বিতর্কের অবসান হয়নি। অবশেষে ত্রিশ বছরের যুদ্ধ শেষ হয় ওজনাব্র্যুক এবং ম্যুনস্টার এর চুক্তির মাধ্যমে যা ছিল বৃহত্তর ভেস্টফালিয়ার শান্তির অংশ।[13]