দক্ষিণ ভারতের ইতিহাস
ইতিহাসের বিভিন্ন দিক / From Wikipedia, the free encyclopedia
দক্ষিণ ভারতের ইতিহাস দুই সহস্রাধিক বছর ধরে ঘটমান উক্ত অঞ্চলের একাধিক রাজবংশ ও সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের ইতিহাস। দক্ষিণ ভারত ভূখণ্ডে প্রাগৈতিহাসিক জনবসতির একাধিক নিদর্শন পাওয়া গেছে। দক্ষিণ ভারতের প্রাচীন ইতিহাসের কোনো লিখিত উপাদান না পাওয়া গেলেও প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের ফলে প্রাপ্ত ধ্বংসাবশেষ থেকে অনুমিত হয় খ্রিষ্টের জন্মের কয়েকশো বছর আগেই এই অঞ্চলে সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। মৌর্য সম্রাট অশোক সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে নিজ আধিপত্য বিস্তার করার সময় দাক্ষিণাত্যের একাধিক অঞ্চল জয় করেন। এই সময় থেকেই এই অঞ্চলের লিখিত ইতিহাসের সূত্রপাত। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে সাতবাহন, চালুক্য, পল্লব, রাষ্ট্রকূট, চের, চোল, পাণ্ড্য, কাকতীয় ও হোয়েসল রাজবংশ দক্ষিণ ভারতে নিজ আধিপত্য বিস্তার করে। এই সকল রাজ্যগুলি সর্বদাই নিজেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিগ্রহে লিপ্ত থাকত। পরে উত্তর ভারত থেকে মুসলমান বাহিনী দক্ষিণ ভারত আক্রমণ করলে তাদের বিরুদ্ধেও এরা সামরিক অভিযান চালায়। মুসলমান আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ উত্থান ঘটে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের। এই সাম্রাজ্য সমগ্র দক্ষিণ ভারতে নিজ অধিকার স্থাপন করতে সক্ষম হয় এবং দাক্ষিণাত্যে মুঘল অভিযানের বিরুদ্ধে প্রধান বাধাস্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়। ষোড়শ শতাব্দীতে যখন ইউরোপীয় শক্তিগুলি এই অঞ্চলে পদার্পণ করতে শুরু করে তখন এই নতুন প্রতিকূলতার সঙ্গে সংগ্রামের ক্ষমতা দক্ষিণের রাজন্যবর্গের মধ্যে আর অবশিষ্ট ছিল না। ফলে ধীরে ধীরে সমগ্র দক্ষিণ ভারত ব্রিটিশদের অধীনস্থ হয়ে পড়ে। ব্রিটিশ সরকার দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলকে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত করেন। অবশিষ্ট অঞ্চলগুলি একাধীন ব্রিটিশ-নির্ভরশীল দেশীয় রাজ্যে বিভক্ত থাকে। ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের পর ভাষার ভিত্তিতে দক্ষিণ ভারত অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, কেরল ও তামিলনাড়ু রাজ্যে বিভক্ত হয়।