ভারতে নারীবাদ
From Wikipedia, the free encyclopedia
ভারতে নারীবাদ হল ভারতের নারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা ও রক্ষার আন্দোলন। এই ধারণাগুলিকে সংজ্ঞায়িত করার ক্ষেত্রেও এই আন্দোলনের অংশীদারেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকেন। এটি ভারত রাষ্ট্রের মধ্যে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। অন্যান্য দেশের নারীবাদী আন্দোলনের মত ভারতেও এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্যের মধ্যে আছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা অর্জন: সমান পারিশ্রমিকে কাজ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় সমানাধিকার এবং রাজনীতিতে সমানাধিকার।[1] ভারতীয় নারীবাদীরা ভারতের নির্দিষ্ট পিতৃতান্ত্রিক সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে কিছু স্বতন্ত্র আন্দোলনও পরিচালনা করেছেন, যেমন সতীদাহ প্রথা রদ ও উত্তরাধিকার আইনের প্রতিষ্ঠা।
ভারতে নারীবাদের ইতিহাসকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ব্রিটিশ শাসনের আরম্ভের পর সতীদাহ প্রথার বিরোধিতার মাধ্যমে সূত্রপাত হয় প্রথম পর্বের। ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি সংস্কারপন্থীরা শিক্ষায় সংস্কার করে নারী অধিকারের পক্ষে কথা বলতে শুরু করেন, বিভিন্ন প্রথায় নারীদের অংশগ্রহণের কথা বলেন।[2][3] ১৯১৫ থেকে ভারতের স্বাধীনতা পর্যন্ত স্থায়ী দ্বিতীয় পর্বে মহাত্মা গান্ধী ভারত ছাড়ো আন্দোলন ও অন্যান্য আন্দোলনে নারীদের সামিল করে নেন এবং দেশের নানা স্থানে স্বতন্ত্র নারী সংগঠন গড়ে উঠতে থাকে। স্বাধীনতা-উত্তর অর্থাৎ তৃতীয় পর্বে ভারতে নারীবাদী আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হয়েছে বিয়ের পর, কর্মক্ষেত্রে ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে মেয়েদের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখা।
ভারতের নারীবাদী আন্দোলনের সাফল্য এখনও অবধি সীমিত। আধুনিক ভারতের অধিবাসী নারীদের বহু ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতে হয়। ভারতের পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা নারীদের জমিতে অধিকার ও শিক্ষায় অধিকারের বিষয়গুলোতে বিশেষ প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। গত দুই দশকে দেশে লিঙ্গভিত্তিক গর্ভপাতের প্রবণতা বেড়েছে। বর্তমান ভারতে নারীবাদ এগুলোকে নির্মূল করতে চায়।[3]
ভারতে নারীবাদী আন্দোলনের সমালোচনাও হয়েছে। এই সমালোচনার মূল অভিযোগ হল এই আন্দোলন দেশের ইতোমধ্যেই বিশেষাধিকার প্রাপ্ত নারীদের মধ্যে বহুলাংশে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ছে ও নিম্ন বর্ণের নারীদের অবহেলা করছে। এর ফলে বর্ণভিত্তিক নারী-সংগঠন ও আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছে।[4]