মধ্য এশিয়ায় রুশ বিজয়াভিযান
From Wikipedia, the free encyclopedia
মধ্য এশিয়ায় রুশ বিজয়াভিযান ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে পরিচালিত হয়েছিল। যে ভূখণ্ড রুশ তুর্কিস্তান এবং পরবর্তীতে সোভিয়েত মধ্য এশিয়ার রূপ লাভ করেছিল সেটি এখন উত্তরে কাজাখস্তান, কেন্দ্রে উজবেকিস্তান, পূর্বে কিরগিজস্তান, দক্ষিণ-পূর্বে তাজিকিস্তান এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে তুর্কমেনিস্তানে বিভক্ত। রুশদের আগমনের আগে এই ভূখণ্ডের উত্তরাংশ কাজাখ স্তেপভূমির যাযাবরদের এবং দক্ষিণাংশ বৃহত্তর ইরানের অংশ ছিল। এই ভূখণ্ডের অধিকাংশ অধিবাসী তুর্কি ভাষাগোষ্ঠির বিভিন্ন ভাষায় কথা বলত। এজন্য ভূখণ্ডটি তুর্কিস্তান নামে পরিচিত ছিল।
মধ্য এশিয়ায় রুশ বিজয়াভিযান | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
রুশ তুর্কিস্তান | |||||||||
| |||||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||||
কাজাখ খানাত বুখারা আমিরাত খিভা খানাত কোকান্দ খানাত তুর্কমেন গোত্রসমূহ কিরগিজ গোত্রসমূহ আফগানিস্তান | |||||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||||
প্রথম নিকোলাস দ্বিতীয় আলেকজান্ডার তৃতীয় আলেকজান্ডার দ্বিতীয় নিকোলাস ভ্যাসিলি পেরোভস্কি কনস্ট্যান্টিন ভন কাউফম্যান আইভান লাজারেভ নিকোলাই লোমাকিন মিখাইল স্কবেলেভ ওরমন খান |
কেনেসারি খান † নাসরুল্লাহ খান মুজাফফরউদ্দিন বাহাদুর খান আল্লাহ কুলি বাহাদুর আবুল গাজী মোহাম্মদ আমিন বাহাদুর কুতলুঘ মোহাম্মদ মুরাদ বাহাদুর সাঈদ মোহাম্মদ দ্বিতীয় মোহাম্মদ রহিম বাহাদুর মোহাম্মদ মাল্লা বেগ খান মোহাম্মদ সুলতান খান আলিমকুল † মোহাম্মদ খুদায়ের খান তুর্কমেন গোত্রসমূহ: বেরদি মুরাদ খান † কারা বাতির † আব্দুর রহমান খান | ||||||||
শক্তি | |||||||||
১৮৩৯: ৫,০০০ সৈন্য ১০,০০০ উট ১৮৫৩: ২,০০০+ সৈন্য ১৮৬৪: ২,৫০০ সৈন্য ১৮৭৩: ১৩,০০০ সৈন্য ১৮৭৯: ৩,৫০০ সৈন্য ১৮৮১: ৭,১০০ সৈন্য ১৮৮৩–১৮৮৫: ১,৫০০ সৈন্য |
১৮৫৩: ~১২,০০০ সৈন্য ১৮৬৫: ~৩৬,০০০ সৈন্য | ||||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||||
১৮৩৯: ১,০৫৪ সৈন্য নিহত অথবা রোগের কারণে মৃত ১৮৭৯: ২০০+ সৈন্য নিহত ~২৫০ সৈন্য আহত ১৮৮১: ৫৯–২৬৮ সৈন্য নিহত ২৫৪–৬৬৯ সৈন্য আহত ৬৪৫ সৈন্য রোগের কারণে মৃত ১৮৮৫: ১১ সৈন্য নিহত অথবা আহত |
১৮৫৩: ২৩০+ সৈন্য নিহত তুর্কমেন গোত্রসমূহ: ১৮৭৯: ২,০০০+ সৈন্য নিহত ২,০০০+ সৈন্য আহত ১৮৮১: ~৮,০০০ সৈন্য ও বেসামরিক নাগরিক নিহত ১৮৮৫: ~৯০০ সৈন্য নিহত অথবা আহত |
অষ্টাদশ শতাব্দীতে রুশরা কাজাখ স্তেপভূমিতে আধিপত্য বিস্তার শুরু করে। ১৮৩৯ সালে তারা খিভা আক্রমণ করে, কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে পরাজিত হয়। ১৮৪৭–১৮৫৩ সালে রুশরা আরল সাগরের উত্তরে সিরদরিয়া নদীর পূর্বতীর পর্যন্ত অনেকগুলো দুর্গ নির্মাণ করে। ১৮৪৭–১৮৬৪ সালে তারা পূর্ব কাজাখ স্তেপভূমি অতিক্রম করে এবং কিরগিজস্তানের উত্তর সীমান্ত বরাবর অনেকগুলো দুর্গ নির্মাণ করে। ১৮৬৪–১৮৬৮ সালে তারা কিরগিজস্তান থেকে দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়, তাসখন্দ ও সমরকন্দ দখল করে নেয়[4], এবং কোকান্দ খানাত ও বুখারা আমিরাতকে আশ্রিত রাজ্যে পরিণত করে। ১৮৭৩ সালে তারা খিভা এবং ১৮৮১ সালে পশ্চিম তুর্কমেনিস্তান দখল করে।[2] ১৮৮৪ সালে তারা মার্ভ মরূদ্যান এবং পূর্ব তুর্কমেনিস্তান অধিকার করে নেয়। ১৮৮৫ সালে রুশরা আফগানিস্তানের কাছ থেকে পাঞ্জদেহ দখল করে নেয়, কিন্তু ব্রিটিশ হস্তক্ষেপের ফলে তাদের দক্ষিণমুখী সম্প্রসারণ বন্ধ হয়। ১৮৯৩–১৮৯৫ সালে তারা দক্ষিণপূর্বে পামির উচ্চভূমি অধিকার করে এবং এর মধ্য দিয়ে মধ্য এশিয়ায় রুশ বিজয়াভিযানের সমাপ্তি ঘটে।