মহা ইথিওপীয় পুনর্জন্ম বাঁধ
From Wikipedia, the free encyclopedia
মহা ইথিওপীয় পুনর্জন্ম বাঁধ (Grand Ethiopian Renaissance Dam বা সংক্ষেপে GERD), বা তাইহিজি (TaIHiGe; আমহারীয়: ታላቁ የኢትዮጵያ ሕዳሴ ግድብ, প্রতিবর্ণীকৃত: Tālāqu ye-Ītyōppyā Hidāsē Gidib, অরমো: Hidha Guddicha Haaromsa Itoophiyaa[7]), যা অতীতে সহস্রাব্দ বাঁধ নামে পরিচিত ছিল এবং যাকে কদাচিৎ হিদাসা বাঁধ (আমহারীয়: ሕዳሴ ግድብ, প্রতিবর্ণীকৃত: Hidāsē Gidib) নামেও ডাকা হয়, পূর্ব আফ্রিকার রাষ্ট্র ইথিওপিয়াতে ২০১১ সাল থেকে নীলাভ নীল নদের উপরে নির্মাণাধীন একটি অভিকর্ষীয় বাঁধ। বাঁধটি ইথিওপিয়ার বেনিশানগুই-গুমুজ অঞ্চলে ও ইথিওপিয়া-সুদান সীমান্ত থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত।[8][9]
মহা ইথিওপীয় পুনর্জন্ম বাঁধ | |
---|---|
আনুষ্ঠানিক নাম | ইংরেজি: Grand Ethiopian Renaissance Dam আমহারীয়: ታላቁ የኢትዮጵያ ሕዳሴ ግድብ অরমো: Hidha Guddicha Haaromsa Itoophiyaa |
দেশ | ইথিওপিয়া |
অবস্থান | বামেজা, বেনিনশাংগুল-গুমুজ অঞ্চল |
স্থানাঙ্ক | ১১°১২′৫৫″ উত্তর ৩৫°০৫′৩৫″ পূর্ব |
উদ্দেশ্য | শক্তি |
অবস্থা | নির্মানাধীন |
নির্মাণ শুরু | ২রা এপ্রিল, ২০১১ |
উদ্বোধনের তারিখ | ২১শে জুলাই, ২০২০[1][2] |
নির্মাণ ব্যয় | ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার |
মালিক | ইথিওপিয়ান ইলেকট্রিক পাওয়ার |
বাঁধ এবং অতিরিক্ত জলনির্গমপথ | |
বাঁধের ধরন | অভিকর্ষ বল, বেলন দ্বারা ঘনবিন্যস্ত কংক্রিট |
আবদ্ধতা | নীলাভ নীল নদ |
উচ্চতা | ১৪৫ মি (৪৭৬ ফু)[3] |
দৈর্ঘ্য | ১,৭৮০ মি (৫,৮৪০ ফু) |
চূড়ায় উচ্চতা | ৬৫৫ মি (২,১৪৯ ফু) |
বাঁধের আয়তন | ১,০২,০০,০০০ মি৩ (১,৩৩,০০,০০০ cu yd) |
অতিরিক্ত পানি নির্গমনের পথ | ১টি দ্বারযুক্ত, ২টি দ্বারহীন |
অতিরিক্ত জলনির্গমপথের ধরন | 6 sector gates for the gated spillway |
অতিরিক্ত জলনির্গমপথের ধারণক্ষমতা | ১৪,৭০০ মি৩/সে (৫,২০,০০০ ঘনফুট/সে) for the gated spillway |
জলাধার | |
তৈরি | Millennium Reservoir |
মোট ধারণক্ষমতা | ৭৪×১০ |
সক্রিয় ধারণক্ষমতা | ৫৯.২×১০ |
নিষ্ক্রিয় ধারণক্ষমতা | ১৪.৮×১০ |
অববাহিকার আয়তন | ১,৭২,২৫০ কিমি২ (৬৬,৫১০ মা২) |
পৃষ্ঠতলের আয়তন | ১,৮৭৪ কিমি২ (৭২৪ মা২) |
সর্বাধিক দৈর্ঘ্য | ২৪৬ কিমি (১৫৩ মা) |
সর্বাধিক পানির গভীরতা | ১৪০ মি (৪৬০ ফু) |
সাধারণ উচ্চতা | ৬৪০ মি (২,১০০ ফু) |
পাওয়ার স্টেশন | |
কার্যকারক | Ethiopian Electric Power |
সম্পাদনের তারিখ | 2020–2022[4][5] |
ধরন | প্রচলিত |
ঘূর্ণযন্ত্র | 14 x 400 MW 2 x 375 MW Francis turbines |
স্থাপিত ক্ষমতা | 6.35 GW (max. planned)[6] |
উৎপাদন ক্ষমতা | ২৮.৬% |
বার্ষিক উৎপাদন | 16,153 GWh (est., planned)[6] |
ওয়েবসাইট www |
বাঁধটি নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য হল বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করে ইথিওপিয়াতে বিদ্যুৎশক্তির তীব্র ঘাটতি লাঘব করা ও প্রতিবেশী দেশগুলিতে বিদ্যুৎশক্তি রপ্তানি করা। এটির পরিকল্পিত উৎপাদন ক্ষমতা ধরা হয়েছে ৫.১৫ গিগাওয়াট (৫১৫০ মেগাওয়াট); ফলে নির্মাণকাজ শেষে এটি সমগ্র আফ্রিকা মহাদেশের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ শক্তিকেন্দ্রে পরিণত হবে।[10] একই সাথে এটি বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে।[11][12][13] বাঁধটি ইথিওপিয়ার বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন তিনগুণ বৃদ্ধি করবে এবং পূর্ব আফ্রিকার অন্যান্য দেশগুলিতে স্বল্পমূল্যে দূষণমুক্ত ও নবায়নযোগ্য শক্তি সরবরাহের কেন্দ্রে পরিণত হবে। এছাড়া বাঁধটি মৌসুমভিত্তিক নীল নদের পানির ওঠানামা নিয়ন্ত্রণে এনে বছরব্যাপী একই জলপ্রবাহ বজায় রাখতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে উদ্ভূত পানি সরবরাহ সমস্যার মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বাঁধের জলাধারটিতে জল ভর্তির প্রক্রিয়া ২০২০ সালের জুলাই মাসে শুরু হয়।[1][2] পুরো জলভর্তির প্রক্রিয়াটি শেষ হতে ৪ থেকে ৭ বছর লাগবে,[14] যা ভর্তিকালীন সময়ে জলবৈজ্ঞানিক পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল।[15] ২০২১ সালের ১৯শে জুলাই জলভর্তির দ্বিতীয় দশাটি সমাপ্ত হয়, তবে এতে মিশর ও সুদানের সম্মতি ছিল না।[16]
২০২২ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি তারিখে বাঁধটি প্রথমবারের মতো বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ জালিব্যবস্থাতে ৩৭৫ মেগাওয়াট হারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।[17]
জলাধারটি সম্পূর্ণ ভর্তি হলে এটিতে ৭ হাজার কোটি ঘনমিটার পানি ধারণ করবে। ২০২২ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবিই আহমেদ আনুষ্ঠানিকভাবে বাঁধটি উদ্বোধন করেন। এসময় বাঁধটির নির্মাণকাজ প্রায় ৮৪% সমাপ্ত হয়েছিল এবং এর জলাধারে প্রায় ১ হাজার ৮৫০ কোটি ঘনমিটার পানি জমা ছিল।
বাঁধটি ইথিওপিয়ার নাগরিকদের জন্য একটি গর্বের বিষয়। ইথিওপীয় নাগরিক, প্রবাসে বসবাসরত ইথিওপীয় সম্প্রদায়ের লোকজন ও চীনের এক্সিম ব্যাংকের প্রদত্ত ১০০ কোটি মার্কিন ডলার অনুদান মিলে সর্বমোট ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থসংস্থানে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছে।