মুহাম্মদ আমিন আল-হুসাইনি
জেরুজালেমের প্রধান মুফতি / From Wikipedia, the free encyclopedia
মুহাম্মদ আমিন আল-হুসাইনি (আরবি: محمد أمين الحسيني;[5] আনু. ১৮৯৭;[6][7] – ৪ জুলাই ১৯৭৪) ছিলেন ফিলিস্তিনি আরব জাতীয়তাবাদী ও মেন্ডেটরি প্যালেস্টাইনের মুসলিম নেতা।[8]
মুহাম্মদ আমিন আল-হুসাইনি | |
---|---|
জেরুসালেমের গ্র্যান্ড মুফতি | |
কাজের মেয়াদ ১৯২১ – ১৯৩৭[1][2][3][4] | |
পূর্বসূরী | কামিল আল-হুসাইনি |
উত্তরসূরী | হুসামউদ্দিন জারাল্লাহ |
সুপ্রিম মুসলিম কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট | |
কাজের মেয়াদ ১৯২২ – ১৯৩৭ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | আনু. ১৮৯৭ জেরুসালেম, উসমানীয় সাম্রাজ্য |
মৃত্যু | ৪ জুলাই ১৯৭৪(১৯৭৪-০৭-০৪) বৈরুত, লেবানন |
রাজনৈতিক দল | আরব হাইয়ার কমিটি |
জীবিকা | মুফতি |
ধর্ম | সুন্নি ইসলাম |
সামরিক পরিষেবা | |
আনুগত্য |
|
তিনি জেরুসালেমের সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[9] ইসলামি, উসমানীয় ও ক্যাথলিক শিক্ষালয়ে শিক্ষাগ্রহণের পর তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে উসমানীয় সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। যুদ্ধ শেষে তিনি সিরিয়া আরব রাজতন্ত্রের সমর্থক হিসেবে দামেস্কে অবস্থান নেন। ফরাসি-সিরিয়ান যুদ্ধে পরাজয় এবং দামেস্কে আরব হাশেমি শাসনের পতনের পর তিনি ইতঃপূর্বের প্যান আরবিজম ধারণা থেকে ফিলিস্তিনি আরবদের জন্য স্থানীয় জাতীয়তাবাদে সরে আসেন। তিনি নিজে জেরুসালেমে চলে আসেন। ১৯২০ এর প্রথম থেকে আরব রাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীন ফিলিস্তিনের সুরক্ষার জন্য তিনি সক্রিয়ভাবে জায়নবাদের বিরোধিতা করেন। ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জাতীয় আবাসভূমির প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দাঙ্গার সাথে সংশ্লিষ্ট ধরা হয়েছিল। তাকে দশ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। কিন্তু ব্রিটিশরা তাকে মুক্তি দেয়।[10] ১৯২১ সালে তিনি জেরুসালেমের গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে নিয়োগ পান।
১৯৩৬-৩৯ এর ফিলিস্তিনে আরব বিদ্রোহের সময় তার ব্রিটিশ বিরোধিতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এড়িয়ে তিনি ফিলিস্তিন থেকে পালিয়ে প্রথমে লেবাননের ফরাসি মেন্ডেট ও পরে ইরাক রাজতন্ত্রে চলে যান এবং ইটালি ও জার্মানিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার আগ পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি বেতার সম্প্রচার ও বসনিয়ান মুসলিমদের জার্মানদের সাথে যোগ দিতে সাহায্য করে নাৎসি জার্মানি ও ফেসিস্ট ইটালির সহযোগিতা করেন। এডলফ হিটলারের সাক্ষাতের সময় তিনি আরব স্বাধীনতায় সমর্থন এবং ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতায় সমর্থন দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান। যুদ্ধের পর তিনি ফরাসি হেফাজতে আসেন এবং অভিযোগ এড়ানোর জন্য কায়রোর কাছে আশ্রয় চান।
১৯৪৮ ফিলিস্তিন যুদ্ধের সময় পর্যন্ত হুসাইনি ১৯৪৭ সালের জাতিসংঘের বিভাগ পরিকল্পনা ও বাদশাহ প্রথম আবদুল্লাহ কর্তৃক মেন্ডেটরি প্যালেস্টাইনকে জর্ডানের অংশ করে নেয়া, উভয় পরিকল্পনার বিরোধিতা করেন। জইশ আল-ইনকাদ আল-আরাবির কমান্ড লাভে ব্যর্থ হয়ে তিনি আরব লীগের পৃষ্ঠপোষকতায় নিজস্ব মিলিশিয়া আল-জিহাদ আল-মুকাদ্দাস গঠন করেন। ১৯৪৮ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি নিখিল ফিলিস্তিন সরকার গঠনে অংশ নেন। এটি মিশর শাসিত গাজায় অবস্থিত ছিল। এই সরকার আরব রাষ্ট্রসমূহের কাছ থেকে স্বল্প স্বীকৃতি পায়। ১৯৫৯ সালে মিশরের রাষ্ট্রপতি জামাল আবদেল নাসের একে বিলুপ্ত করেন। যুদ্ধ ও পরবর্তী ফিলিস্তিনিদের দেশত্যাগের ফলে তার নেতৃত্ব অস্বীকৃত হয় এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন কর্তৃক আড়াল হয়ে পড়েন। তিনি তার অধিকাংশ অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রভাব হারিয়ে ফেলেন।[11] ১৯৭৪ সালের জুলাইয়ে তিনি লেবাননের বৈরুতে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি সর্বদা আলোচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ইতিহাসবিদরা তার জায়নবাদ বিরোধী অবস্থানের কারণ নিয়ে মতপার্থক্য প্রকাশ করে থাকেন।