মেসিডনীয় যুদ্ধসমূহ
From Wikipedia, the free encyclopedia
ম্যাসেডোনীয় যুদ্ধসমূহ ছিল (খ্রিস্টপূর্ব ২১৪–১৪৮) পূর্ব ভূমধ্যসাগরে বিভিন্ন প্রধান প্রধান গ্রীক রাজ্যের বিরুদ্ধে রোমান প্রজাতন্ত্র এবং এর গ্রীক মিত্রদের দ্বারা লড়াই করা একাধিক দ্বন্দ্ব । এর ফলস্বরূপ পুনিক যুদ্ধের পরে পশ্চিম ভূমধ্যসাগরে রোমান আধিপত্য ছাড়াও পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অববাহিকার উপর রোমান নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব সৃষ্টি হয়েছিল। ঐতিহ্যগতভাবে, "ম্যাসেডোনিয়ার যুদ্ধসমূহ" এর মধ্যে ম্যাসেডোনিয়ার সাথে চারটি যুদ্ধের পাশাপাশি সেলিউসিড সাম্রাজ্যের সাথে একটি যুদ্ধ এবং আচিয়ান লিগের সাথে একটি চূড়ান্ত ছোটখাটো যুদ্ধ অন্তর্ভুক্ত ছিল (যা প্রায়শই চূড়ান্ত ম্যাসেডোনিয়ার যুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায় হিসাবে বিবেচিত হয়)। সিলিউসিড সাম্রাজ্যের সাথে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ হয়েছিল এবং ম্যাসেডোনিয়ার সাথে দ্বিতীয় সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ হয়েছিল এবং এই যুদ্ধই কার্যকরভাবে এই উভয় সাম্রাজ্যের প্রধান বিশ্বশক্তি হিসাবে অবস্থানের সমাপ্তি চিহ্নিত করেছিল, যদিও এই দুই রাজ্যের কোনোটি তখন রোমান আধিপত্যকে কাটিয়ে উঠতে নেতৃত্ব দেয়নি। [1] রোম তার ভৌগোলিক সান্নিধ্যের কারণে দুর্বল শক্তি ম্যাসেডোনিয়ার বিরুদ্ধে চারটি পৃথক যুদ্ধ লড়াই করেছিল, যদিও এর মধ্যে দুটি যুদ্ধ শক্তিশালী সেনাবাহিনীর চেয়ে আকষ্মিক বিদ্রোহের বিরুদ্ধে ছিল।[2] রোমান প্রভাব ক্রমান্বয়ে একটি শীর্ষস্থানীয় বৈশ্বিক সাম্রাজ্যে পরিণত হতে যাওয়া ম্যাসেডোনিয়ার স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করেছিল এবং এটিকে গ্রাস করেছিল। ক্রমশ দুর্বল হওয়া সেলিউসিড সাম্রাজ্যের সাথে যুদ্ধের পরিণতিও চূড়ান্তভাবে এর জন্য মারাত্মক ছিল যদিও পার্থিয়া এবং পন্টাসের ক্রমবর্ধমান প্রভাব তার এবং রোমের মধ্যে কোনও অতিরিক্ত দ্বন্দ্বকে রোধ করেছিল।[2]
ম্যাসেডোনীয় যুদ্ধের সমাপ্তি থেকে রোমান সাম্রাজ্যের গোড়ার দিক অবধি রোমের প্রদত্ত বিভিন্ন স্তরের স্বাধীনতা, নির্ভরতা বা একচেটিয়া সামরিক নিয়ন্ত্রণের অধীনে থাকা পূর্ব ভূমধ্যসাগরে বিভিন্ন ধরনের শাসনের ব্যবস্থা ছিল।[3] পলিবিয়াসের মতে,[4] যারা আবিষ্কার করতে চেয়েছিল যে এক শতাব্দীরও কম সময়ে রোম কীভাবে গ্রীক পূর্বাঞ্চলে এসেছিল তাদের উদ্দেশ্যে:টলেমিক মিশর এর দুর্বলতা দ্বারা তৈরি হওয়া অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকটি গ্রীক নগর-রাষ্ট্র যখন ম্যাসেডোনিয়ার সাম্রাজ্য এবং সেলিউসিড সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে রোমান সুরক্ষা চেয়েছিল তখন গ্রিসের সাথে রোমের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ।.[5] পশ্চিমের বিপরীতে,পূর্ব গ্রীসে শতাব্দী ধরে প্রধান সাম্রাজ্যের আধিপত্য ছিল, এবং রোমান প্রভাব এবং জোট-সন্ধানের ফলে এই সাম্রাজ্যগুলির সাথে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল যা তাদের আরও দুর্বল করেছিল এবং তাই অস্থিতিশীল শক্তি শূন্যতা তৈরি হয়েছিল যা কেবল রোম শান্ত করতে সক্ষম ছিল।[6] শতাব্দী আগে ইতালিতে যা ঘটেছিল তার সাথে এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ মিল (এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য) ছিল, তবে এবার মহাদেশীয় আকারে ছিল। ঐতিহাসিকরা [7] পশ্চিমের মত পূর্বের দিকে ক্রমবর্ধমান রোমানদের প্রভাবকে দেখেছেন ইচ্ছাকৃত সাম্রাজ্য গঠনের বিষয় হিসাবে নয়, বরং খুব অস্থিতিশীল, অবিশ্বাস্য এবং আন্তঃ- জোট এবং নির্ভরতার নির্ভরশীল- অন্তর্জালে কিছু স্বল্প মেয়াদি লক্ষ্য পূরণের প্রচেষ্টায় প্রতিনিয়ত সংকট মোকাবেলা হিসেবে।[8] খাঁটি সামরিক শাসনের কিছু বড় ব্যতিক্রম (যেমন মূল ভূখণ্ডের গ্রিসের অংশ) বাদ দিয়ে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল স্বাধীন নগর-রাজ্য এবং রাজ্যগুলির একটি জোটে থেকে যায় (বিভিন্ন মাত্রার স্বাধীনতার , ডি জুরে এবং ডি ফ্যাক্টো উভয়ই),রোমান সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত না হওয়া অবধি ।[9] রোমান সাম্রাজ্যের সময় পূর্ব ভূমধ্যসাগরসহ পুরো রোমান বিশ্বকে, সুস্পষ্ট রোমান নিয়ন্ত্রণের প্রদেশে সংগঠিত করা হয়েছিল।[10]