মোরিস আলে
ফরাসি অর্থনীতিবিদ / From Wikipedia, the free encyclopedia
মোরিস ফেলিক্স শার্ল আলে (ফরাসি: Maurice Félix Charles Allais; ৩১শে মে, ১৯১১ - ৯ই অক্টোবর, ২০১০) একজন ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী এবং অর্থনীতিবিদ। অর্থশাস্ত্রের নব্যধ্রুপদী সংশ্লেষণে "বাজার তত্ত্ব এবং সম্পদের দক্ষ ব্যবহারে অগ্রণী অবদানের জন্য" তিনি ১৯৮৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল স্মারক পুরস্কার লাভ করেন। তার আগে জন হিকস (মূল্য ও মূলধন, ১৯৩৯) এবং পল স্যামুয়েলসনও (অর্থনৈতিক বিশ্লেষণের ভিত্তি, ১৯৪৭) এ বিষয়ে অবদান রাখার জন্য নোবেল পুরস্কার পান। এই তিন অর্থনীতিবিদ বাজারের আত্ম-নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারটিকে সূত্রবদ্ধ করেন। ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ জন মেনার্ড কেইনস এই সূত্রায়ন খণ্ডন করলেও আলে-র কিছু কিছু ধারণার পুনরাবৃত্তি করেছিলেন।
মোরিস আলে | |
---|---|
জন্ম | (১৯১১-০৫-৩১)৩১ মে ১৯১১ |
মৃত্যু | ৯ অক্টোবর ২০১০(2010-10-09) (বয়স ৯৯) সাঁ-ক্লু,[1] প্যারিস, ফ্রান্স |
জাতীয়তা | ফরাসি |
কাজের ক্ষেত্র | ব্যষ্টিক অর্থনীতি আচরণিক অর্থনীতি |
ঘরানা/গোষ্ঠী/ঐতিহ্য | ওয়ালরাসীয় অর্থনীতি |
শিক্ষায়তন | একল পোলিতেকনিক একোল নাসিওনাল সুপেরিয়র দে মিন দ্য পারি প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় |
যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন | লেওঁ ওয়ালরাস আরভিং ফিশার ভিলফ্রেদো পারেতো |
পুরস্কার | অর্থনীতিতে নোবেল স্মারক পুরস্কার (১৯৮৮) |
Information at IDEAS / RePEc | |
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে জন্মগ্রহণকারী মোরিস আলে শৈশবে লিসে লাকানাল বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে প্যারিসের একল পোলিতেকনিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থেকে স্নাতক শিক্ষাক্রম সম্পন্ন করেন এবং এরপর প্যারিসের একল নাসিওনাল সুপেরিয়র দে মিন-এ অধ্যয়ন করেন। তাঁর উচ্চশিক্ষায়তনিক এবং অন্যান্য পদের মধ্যে রয়েছে একল নাসিওনাল সুপেরিয়র দে মিন দ্য পারি-তে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক (১৯৪৪ সাল থেকে) এবং এর অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ কেন্দ্রের পরিচালক (১৯৪৬ সাল থেকে)। ১৯৪৯ সালে তিনি প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ থেকে ডক্টর-প্রকৌশলী উপাধি লাভ করেন। তিনি প্যারিস এক্স-নঁতের বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার পদেও অধিষ্ঠিত ছিলেন। গবেষক জীবনের প্রথম দিকে তিনি কংক্রিটের বিজ্ঞান এবং মৌলিক পদার্থবিদ্যার পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রতি আকৃষ্ট হন, যেগুলির উপর তিনি বহুসংখ্যক গবেষণাকর্ম প্রকাশ করেছেন। এগুলির মধ্যে দোলকের দোলন এবং মহাকর্ষ সূত্রের উপর করা গবেষণাকর্মগুলি বিশেষভাবে উল্লেখ্য। ১৯৩৩ সালে অর্থনৈতিক মহামন্দার (গ্রেট ডিপ্রেশন) সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের পর তিনি অর্থনীতি বিষয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন।[2] আলে ৯৯ বছর বয়সে প্যারিসের কাছে সেন্ট-ক্লাউডে তার নিজ বাড়িতে মারা যান [3]
ফরাসি অর্থনীতিবিদ লেওঁ ওয়ালরাস, ইতালীয় অর্থনীতিবিদ ভিলফ্রেদো পারেতো ও মার্কিন অর্থনীতিবিদ আরভিং ফিশার আলে-র মূল অনুপ্রেরণা ছিলেন। তিনি তার গবেষণাকর্মগুলি ইংরেজি ভাষায় লিখতে বা অনুবাদ করতে অনিচ্ছুক ছিলেন। এই কারণে তার অনেক বড় বড় অবদান মূলধারার অর্থনীতিবিদ সম্প্রদায়ের কাছে তখনই পরিচিত হয়ে ওঠে, যখন সেগুলি ইংরেজিভাষী অর্থনীতিবিদদের দ্বারা স্বাধীনভাবে পুনরাবিষ্কৃত হয় বা জনপ্রিয় হয়। একই সময়ে তিনি কেইনসের উদারনীতিবাদের পক্ষ নেন এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি খাতের উপস্থিতির পক্ষে নিজের অবস্থান ঘোষণা করেন। আলে মোঁ পেলরাঁ বিদ্বানসমাজের উদ্বোধনী সভায় উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু সম্পত্তির অধিকারের বিস্তার নিয়ে মতবিরোধের কারণে বিদ্বানসমাজটির লক্ষ্য বিষয়ক বিবৃতিটিতে স্বাক্ষরদানে অস্বীকার করেছিলেন; উপস্থিতদের মধ্যে তিনিই ছিলেন একমাত্র ব্যক্তি যিনি স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেছিলেন। যুদ্ধের শেষে তিনি জেরার দ্যব্রো, জাক ল্যজুর্ন, এদমোঁ মালাঁভো ও মার্সেল বোয়াতো-র মতো ফরাসি অর্থনীতিবিদদের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছিলেন।
পল স্যামুয়েলসনের ভাষ্যে "আলে-র প্রথম দিকের লেখাগুলি যদি ইংরেজিতে রচিত হত, তাহলে অর্থনৈতিক তত্ত্বের একটি প্রজন্ম ভিন্ন গতিপথ গ্রহণ করত"। তাঁর মতে আলে-কে নোবেল পুরস্কার আরও অনেক আগেই দেওয়া উচিত ছিল।[4] নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান আসার লিন্ডবেক আলে "অর্থনৈতিক বিশ্লেষণের জগতে একটি দৈত্য" হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন। [5]