হিন্দু পুরাণে এলজিবিটি বিষয়বস্তু
From Wikipedia, the free encyclopedia
হিন্দু পুরাণে এলজিবিটি বিষয়বস্তু বিভিন্নভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। কয়েকজন দেবদেবী ও যোদ্ধার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে বা আচরণে স্ত্রী সমকামীতা, পুরুষ সমকামীতা, উভকামীতা বা রূপান্তরকামীতা অর্থাৎ (এককথায় এলজিবিটি) বৈশিষ্ট্য বা আচরণ পরিদৃষ্ট হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তাঁদের চরিত্রে লিঙ্গ পার্থক্য ও অ-বিষমকামী যৌনপ্রবৃত্তিরও আভাস মেলে। ঐতিহ্যগত হিন্দু সাহিত্যে সরাসরি সমকামিতার কথা উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু বেদ, রামায়ণ, মহাভারত ও বিভিন্ন পৌরাণিক সাহিত্যে এবং স্থানীয় লোকসাহিত্যে লিঙ্গ পরিবর্তন, সমকামোদ্দীপক (হোমোইরোটিক) ঘটনা এবং আন্তঃলিঙ্গ ও তৃতীয় লিঙ্গ চরিত্রের উপস্থিতি প্রায়শই লক্ষ্য করা যায়।
হিন্দু পুরাণে প্রায়শই দেখা যায় দেবদেবীরা লিঙ্গ পরিবর্তন করছেন বা বিভিন্ন সময়ে বিপরীত লিঙ্গের রূপ ধারণ করছে অথবা একজন দেবতা ও একজন দেবী মিলিত হয়ে একই শরীরে উভলিঙ্গ রূপ ধারণ করছেন। যৌনমিলনের সুবিধার্থেও দেবতাদের বিপরীত লিঙ্গের অবতার রূপে অবতীর্ণ হতে দেখা যায়।[1][2][3][4] দেবতা ভিন্ন অন্যান্য চরিত্রদেরও দেবতার বরে বা অভিশাপে অথবা পুনর্জন্মের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় লিঙ্গ পরিবর্তন করতে দেখা যায়।
হিন্দু পুরাণে এমন অসংখ্য ঘটনা দেখা যায়, যেখানে যৌনমিলন একটি অযৌন পবিত্র উদ্দেশ্যে সাধিত হয়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এগুলি সমকামী যৌনমিলন। কখনও কখনও দেবতাদের এই জাতীয় মিলনকে নিন্দা করতে দেখা যায়। কিন্তু অন্য ক্ষেত্রে এগুলি তাঁদেরই বরে ঘটেছে।[5][6]
আধুনিক গবেষক ও সমকামী-অধিকার আন্দোলনকারীরা মূলধারার হিন্দু সাহিত্যে উল্লিখিত লিঙ্গ বিভিন্নতা ও অ-বিষমকামী যৌনপ্রবৃত্তি সংক্রান্ত উপাখ্যানগুলি ছাড়াও অপেক্ষাকৃত অল্পপরিচিত গ্রন্থগুলিতে প্রাপ্ত এলজিবিটি বিষয়বস্তুর উপর আলোকপাত করেছেন। এমনকি সাধারণ দৃষ্টিতে যে সকল উপাখ্যানের মধ্যে কোনও প্রকার সমকামিতার আভাস নেই, তাঁরা সেগুলিরও অ-বিষমকামী ব্যাখ্যা দিয়েছেন। অবশ্য এই ধরনের ব্যাখ্যাকে কেন্দ্র করে প্রাচীন উপাখ্যানগুলির অর্থ সংক্রান্ত মতবিরোধও দেখা দিয়েছে।[7][8]