আলী খামেনেয়ী
ইরানী রাজনীতিবিদ / From Wikipedia, the free encyclopedia
সৈয়দ আলী হোসেইনী খামেনেয়ী[6] (ফার্সি: سید علی حسینی خامنهای; জন্ম ১৯ এপ্রিল ১৯৩৯)[18][19] হলেন একজন ইরানি শিয়া মুসলিম ধর্মগুরু এবং ১৯৮৯ সাল থেকে ইরানের দ্বিতীয় ও বর্তমান সর্বোচ্চ নেতা।[20][21] ১৯৮১ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তিনি ইরানের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। খামেনেয়ী মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে দীর্ঘকালীন রাষ্ট্রপ্রধান এবং মোহাম্মদ রেজা পাহলভির পর গত শতাব্দীর দ্বিতীয় সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতাসীন ইরানি নেতা।[22]
সৈয়দ আলী হোসেইনী খামেনেয়ী | |
---|---|
سید علی حسینی خامنهای | |
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ৪ জুন ১৯৮৯ কার্যনির্বাহ: ৪ জুন – ৬ আগস্ট ১৯৮৯[1] | |
রাষ্ট্রপতি |
|
পূর্বসূরী | রুহুল্লাহ খোমেনী |
ইরানের ৩য় রাষ্ট্রপতি | |
কাজের মেয়াদ ৯ অক্টোবর ১৯৮১ – ১৬ আগস্ট ১৯৮৯[2] | |
প্রধানমন্ত্রী | মীর-হোসেইন মুসাওয়ী |
সর্বোচ্চ নেতা | রুহুল্লাহ খোমেনী |
পূর্বসূরী | মোহাম্মদ-আলী রাজায়ী |
উত্তরসূরী | আকবর হাশেমী রফসঞ্জানী |
যুক্তিসিদ্ধ বুদ্ধিবৃত্তি পরিষদের ১ম সভাপতি | |
কাজের মেয়াদ ৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮ – ৪ জুন ১৯৮৯ | |
নিয়োগদাতা | রুহুল্লাহ খোমেনী |
পূর্বসূরী | দফতর প্রতিষ্ঠিত |
উত্তরসূরী | আকবর হাশেমী রফসঞ্জানী |
বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৫ আগস্ট ১৯৮৩ – ৪ জুন ১৯৮৯ | |
সংসদীয় এলাকা | তেহরান প্রদেশ[3] |
সংখ্যাগরিষ্ঠ | ২,৮০০,৩৫৩ (৮৭.৮%)[4] |
ইসলামি পরামর্শদাতা পরিষদের সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ২৮ মে ১৯৮০ – ১৩ অক্টোবর ১৯৮১ | |
সংসদীয় এলাকা | তেহরান, রে ও শেমিরানাত |
সংখ্যাগরিষ্ঠ | ১,৪০৫,৯৭৬ (৬৫.৮%)[5] |
তেহরানের জুমা নামাজের ইমাম | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ১৪ জানুয়ারি ১৯৮০ | |
নিয়োগদাতা | রুহুল্লাহ খোমেনী |
অন্তর্বতীকালীন ইমামগণ | তালিকা
|
পূর্বসূরী | হোসেইন-আলী মোন্তাজেরী |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | সৈয়দ আলী হোসেইনী খামেনেয়ী[6] (1939-07-16) ১৬ জুলাই ১৯৩৯ (বয়স ৮৪)[7] (সনদের তারিখ)[6] (1939-04-19) ১৯ এপ্রিল ১৯৩৯ (বয়স ৮৫) (প্রকৃত তারিখ)[8] মাশহাদ, খোরাসান, রাজতন্ত্রী ইরান |
রাজনৈতিক দল | নির্দলীয় (১৯৮৯ থেকে) |
অন্যান্য রাজনৈতিক দল |
|
দাম্পত্য সঙ্গী | মনসুরে খোজাস্তে বাগেরজাদে (বি. ১৯৬৪) |
সন্তান |
|
পিতামাতা |
|
আত্মীয়স্বজন | হাদী খামেনেয়ী (ভাই) |
বাসস্থান | নেতৃত্বের বাসভবন |
স্বাক্ষর | |
ওয়েবসাইট | english |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
ধর্ম | ইসলাম |
আখ্যা | শিয়া |
সম্প্রদায় | উসুলি |
ব্যবহারশাস্ত্র | জাফরি |
ধর্মীয় মতবিশ্বাস | ইসনা আশারিয়া |
প্রধান আগ্রহ | উসুল আল-ফিকহ, তাফসীর |
উল্লেখযোগ্য ধারণা | পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে আলী খামেনেয়ীর ফতোয়া[11][12] সুন্নি ইসলামের সম্মানিত ব্যক্তিত্বদের অবমাননার বিরুদ্ধে আলী খামেনেয়ীর ফতোয়া[13][14][15] |
যেখানের শিক্ষার্থী |
|
মুসলিম নেতা | |
যার দ্বারা প্রভাবিত | |
সামরিক কর্মজীবন | |
আনুগত্য | ইরান |
সেবা/ | ইসলামি বিপ্লবী রক্ষীবাহিনী অনিয়মিত যুদ্ধবিগ্রহ দফতর[16] |
কার্যকাল | ১৯৭৯–৮০; ১৯৮০–৮১ |
নেতৃত্বসমূহ | বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর প্রধান[17] |
যুদ্ধ/সংগ্রাম | ইরান-ইরাক যুদ্ধ
|
খামেনেয়ীর দাফতরিক ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী মোহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভির শাসনামলে তিন বছরের জন্য নির্বাসনে পাঠানোর পূর্বে তাঁকে ছয়বার গ্রেফতার করা হয়।[23]
ইসলামি বিপ্লবের পর ১৯৮১ সালের জুনে তাঁকে গুপ্তহত্যার প্রচেষ্টা চালানো হয়, যার ফলে তাঁর ডানহাত অসাড় হয়ে পড়ে।[24][25] ১৯৮০-র দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধকালীন খামেনেয়ী ইরানের অন্যতম নেতা ছিলেন এবং সেই সময় তিনি অধুনা শক্তিশালী ইসলামি বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর সঙ্গে দৃঢ় বন্ধন গড়ে তোলেন।
এই বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ এবং এর কমান্ডারদের নির্বাচন ও অপসারণ তিনি করে থাকেন। খামেনেয়ীর বিরোধীদের দমনের ক্ষেত্রে বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীকে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।[26][27] ১৯৮১ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত খামেনেয়ী ইরানের তৃতীয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং তৎকালীন ও প্রথম সর্বোচ্চ নেতা রুহুল্লাহ খোমেনীর ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। মৃত্যুর অনতিবিলম্ব পূর্বে খোমেনী কর্তৃক মনোনীত তাঁর উত্তরসূরী হোসেইন আলী মোন্তাজেরীর সঙ্গে একটি মতবিরোধ দেখা দেয়। ফলে তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর উত্তরাধিকারী কে হবেন সে ব্যাপারে কোনো ঐক্যমত্য ছিল না।
১৯৮৯ সালের ৪ জুন বিশেষজ্ঞ পরিষদ ৪৯ বছর বয়সী খামেনেয়ীকে পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে নির্বাচন করে। আকবর হাশেমী রফসঞ্জানীর মতে মৃত্যুর পূর্বে খোমেনী তাঁর উত্তরসূরী হিসেবে খামেনেয়ীকে মনোনীত করে গিয়ে ছিলেন। ১৯৭৯ সালের ১৪ এপ্রিল থেকে খামেনেয়ী আস্তান কুদস রাজাওয়ীর সেবকদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।[28]
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে খামেনেয়ী ইসলামি প্রজাতন্ত্রের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।[29][30] তিনি ইরানের রাষ্ট্রপ্রধান, সামরিক বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ, ফরমান জারিকারী এবং অর্থনীতি, পরিবেশ, পররাষ্ট্রনীতি, জাতীয় পরিকল্পনা প্রভৃতি খাতে সরকারি নীতিনির্ধারণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তগ্রহীতা।[31][32][33][34][35][36] করিম সাজ্জাদপুরীর মতে সরকারের নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের পাশাপাশি সামরিক বাহিনী ও গণমাধ্যমের ওপর খামেনেয়ীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।[22]
বিশেষজ্ঞ পরিষদ, রাষ্ট্রপতি ও মজলিসের (আইনসভা) সকল পদপ্রার্থীরা অবিভাবক পরিষদ দ্বারা পুননীরিক্ষিত হন, আর এই অবিভাবক পরিষদের সদস্যগণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা কর্তৃক মনোনীত হন।[37] এরকম ঘটনাও ঘটেছে যেখানে নির্দিষ্ট ব্যক্তির ওপর অবিভাবক পরিষদের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও খামেনেয়ীর নির্দেশে তা বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।[38] ফোর্বস সাময়িকী ২০১২ সালে তাঁকে পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর ২১ জন ব্যক্তির তালিকায় স্থান দেয়।[39] খামেনেয়ী পারমাণবিক অস্ত্র সম্পর্কে ফতোয়া জারি করে বলেন যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ও ব্যবহার ইসলামি বিধান অনুযায়ী নিষিদ্ধ।[40]