আফগানিস্তান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র
১৯৭৮-১৯৯২ দক্ষিণ এশিয়ার প্রজাতন্ত্র / From Wikipedia, the free encyclopedia
আফগানিস্তান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (দারি: جمهوری دمکراتی افغانستان, Jumhūri-ye Dimukrātī-ye Afghānistān; পশতু: دافغانستان دمکراتی جمهوریت, Dǝ Afġānistān Dimukratī Jumhūriyat) ছিল ১৯৭৮ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত বিদ্যমান একটি রাষ্ট্র। ১৯৮৭ সালে রাষ্ট্রের নাম বদলে আফগানিস্তান প্রজাতন্ত্র রাখা হয়। এই সময় আফগানিস্তান পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপিএ) শাসন করেছে। সাওর বিপ্লবের মাধ্যমে এই দল ক্ষমতায় আসে। এই বিপ্লবে মুহাম্মদ দাউদ খানের সরকার উৎখাত হয়। দাউদের পর নূর মুহাম্মদ তারাকি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান হন। তারাকি ও হাফিজউল্লাহ আমিন তাদের শাসনামলে বেশ কিছু সংস্কার করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে নারী অধিকার, শিক্ষা ও ভূমি সংস্কার। তবে ক্ষমতা গ্রহণের পর শীঘ্রই তারাকি ও আমিনের নেতৃত্বাধীন খালকপন্থি এবং বাবরাক কারমালের নেতৃত্বাধীন পারচামপন্থিদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব্ব শুরু হয়। খালকপন্থিরা এতে জয়ী হয় পারচামপন্থিরা দল থেকে বহিষ্কৃত হয়। অধিকাংশ উল্লেখযোগ্য পারচাম নেতারা সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং পূর্বাঞ্চলীয় ব্লকে পালিয়ে যান।
আফগানিস্তান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (১৯৭৮–৮৭) جمهوری دمکراتی افغانستان Jumhūri-ye Dimukrātī-ye Afghānistān دافغانستان دمکراتی جمهوریت Dǝ Afġānistān Dimukratī Jumhūriyat আফগানিস্তান প্রজাতন্ত্র (১৯৮৭–৯২) جمهوری افغانستان Jumhūrī-ye Afġānistān د افغانستان جمهوریت Dǝ Afġānistān Jumhūriyat | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১৯৭৮–১৯৯২ | |||||||||
জাতীয় সঙ্গীত: গারাম শাহ লা গারাম শাহ | |||||||||
রাজধানী | কাবুল | ||||||||
প্রচলিত ভাষা | দারি পশতু | ||||||||
সরকার | একদলীয় সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (১৯৭৮–১৯৮৭) বহুদলীয় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (১৯৮৭–১৯৯২) | ||||||||
দলীয় মহাসচিব | |||||||||
• ১৯৭৮–১৯৭৯ | নূর মুহাম্মদ তারাকি (প্রথম) | ||||||||
• ১৯৮৬–১৯৯২ | মুহাম্মদ নজিবউল্লাহ (শেষ) | ||||||||
রাষ্ট্রপ্রধান | |||||||||
• ১৯৭৮–১৯৭৯ | নূর মুহাম্মদ তারাকি (প্রথম) | ||||||||
• ১৯৯২ | আবদুর রহিম হাতিফ (শেষ) | ||||||||
সরকারপ্রধান | |||||||||
• ১৯৭৮–১৯৭৯ | নূর মুহাম্মদ তারাকি (প্রথম) | ||||||||
• ১৯৯০–১৯৯২ | ফজল হক খালিকিয়ার (শেষ) | ||||||||
আইন-সভা | বিপ্লবী কাউন্সিল (আফগানিস্তান) | ||||||||
ঐতিহাসিক যুগ | স্নায়ু যুদ্ধ | ||||||||
২৭-২৮ এপ্রিল ১৯৭৮ | |||||||||
• সরকার স্থাপিত | ৩০ এপ্রিল ১৯৭৮ | ||||||||
• কাবুলের পতন | ২৮ এপ্রিল ১৯৯২ | ||||||||
আয়তন | |||||||||
১৯৯২ | ৬,৪৭,৫০০ বর্গকিলোমিটার (২,৫০,০০০ বর্গমাইল) | ||||||||
জনসংখ্যা | |||||||||
• ১৯৯২ | 13811900 | ||||||||
মুদ্রা | আফগানি | ||||||||
আইএসও ৩১৬৬ কোড | AF | ||||||||
|
খালক-পারচাম দ্বন্দ্ব্বের পর খালকপন্থিদের অভ্যন্তরে তারাকি ও আমিনের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব্ব শুরু হয়। আমিন এই দ্বন্দ্ব্বে জয়ী হন এবং তার নির্দেশে তারাকিকে হত্যা করা হয়। সংস্কারের ফলে দেশে অজনপ্রিয় ছিলেন। সোভিয়েত ইউনিয়নেও তিনি জনপ্রিয় হননি। ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বরে আফগান সরকারের সমর্থনে সোভিয়েত ইউনিয়ন হস্তক্ষেপ করে। ২৭ ডিসেম্বর সোভিয়েত সামরিক বাহিনীর হাতে আমিন নিহত হন। এরপর কারমাল আফগানিস্তানের নতুন নেতা হন। কারমাল ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। তার শাসনামল সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের জন্য পরিচিত। যুদ্ধের ফলে ব্যাপক সংখ্যক বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়। কয়েক লক্ষ উদ্বাস্তু এসময় পাকিস্তান ও ইরানে পালিয়ে যায়। ১৯৮০ সালের এপ্রিল একটি সংবিধান প্রণীত হয় এবং সমর্থন মজবুত করার জন্য দলের বাইরে থেকে সরকারে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়। কারমালের কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশে শান্তি আনয়ন করা যায়নি। ১৯৮৬ সালে মুহাম্মদ নজিবউল্লাহ দলের মহাসচিব হিসেবে কারমালের উত্তরসুরি হন।
নজিবউল্লাহ বিরোধীদের সাথে সমঝোতা চেষ্টা করেন। ১৯৮৭ সালে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা হয়। ১৯৮৮ সালে আইনসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মুজাহিদিনরা এই নির্বাচন বয়কট করে। আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েতরা চলে যাওয়ার পর সরকার ক্রমবর্ধমান প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। ১৯৯০ সালে আফগান রাজনীতিতে আরো পরিবর্তন আসে। এসময় প্রণীত সংবিধানে আফগানিস্তানকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টিকে ওয়াতান পার্টিতে রূপান্তর করা হয়। সামরিক ক্ষেত্রে সরকার সশস্ত্র বিরোধীদের লড়াইয়ে পরাজিত করতে সক্ষম হয়। তবে সামরিক বিরোধীপক্ষ, অভ্যন্তরীণ বিবাদ, ১৯৯০ সালে খালকপন্থিদের ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টা এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির ফলে ১৯৯২ সালের এপ্রিলে নজিবউল্লাহর সরকারের পতন হয়।