আগমনী গান
From Wikipedia, the free encyclopedia
আগমনী গান হল শারদীয়া দুর্গা পূজার আগে শিবগৃহিণী তথা গিরিরাজ হিমালয় ও মেনকার কন্যা উমার পিত্রালয়ে আগমন বিষয়ক বাংলা গান। মূলত গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকগানের ধারায় গানগুলি উমার পিতৃগৃহে ফিরে আসার বর্ণনা দেয়, তবে দেবী হিসাবে নয়, বরং কন্যা হিসাবে।[1]
পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গীত | |
---|---|
ধারা | |
| |
নির্দিষ্ট ফর্ম | |
ধর্মীয় সঙ্গীত | |
জাতিগত সঙ্গীত | |
ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত | |
গণমাধ্যম ও অনুষ্ঠান | |
সঙ্গীত মাধ্যম | বেতার
টেলিভিশন ইন্টারনেট |
অঞ্চলিক সঙ্গীত | |
সম্পর্কিত এলাকা | |
অন্যান্য অঞ্চল | |
কথিত আছে, ধনাঢ্য গিরিরাজ কন্যা উমার বিবাহ হয় শ্মশানবাসী শিবের সঙ্গে পিতার অমতে। উমা বিবাহের পর দরিদ্র স্বামী গৃহে গমন করলে মাতা মেনকার মন আকুল হয়ে ওঠে। শরতের কোন এক রাতে উমাকে স্বপ্ন দেখে মা মেনকা গিরিরাজকে অনুরোধ করেন উমাকে কয়েকদিনের জন্য নিজের কাছে নিয়ে আসতে। মা-বাবার অনুরোধে উমা দিন চারেকের জন্য পিতার গৃহে আসতে সম্মত হয়। উমার সেই আগমনকে উপলক্ষ করেই রচিত হয় আগমনী গান।
সম্ভবত, অষ্টাদশ শতকের এই গীতধারার উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে। রামপ্রসাদ সেন এই সঙ্গীতধারার প্রথম ও শ্রেষ্ঠ গীতিকার। পরবরতীতে যারা এই গানের ধারাকে আরো সমৃদ্ধ করেছেন তারা হলেন -রাম বসু, জয়নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, গোপালচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃষ্ণমোহন ভট্টাচার্য, দাশরথি রায় কাজী নজরুল ইসলাম প্রমুখেরা। কয়েকটি আগমনী গান উল্লেখ করা গেল-
- সাধক রামপ্রসাদ সেন রচিত জনপ্রিয় আগমনী গান -
- এবার আমার উমা এলে, আর উমায় পাঠাবো না
- আমার উমা সামান্য মেয়ে নয়
- কবিয়াল রাম বসু রচিত আগমনী গান -
- গিরি হে, তোমায় বিনয় করি আনিতে গৌরী,
- কাজী নজরুল ইসলাম রচিত আগমনী গান -
- সোনা আলোর ঢেউ খেলে যায় মাঠের ঘাসে, মোদের মা জননী আসে
- উমা এলো কৈ
আগমনী গান যেমন উমার পিতৃগৃহে আগমন বিষয়ক, তেমনই উমার বিদায় বিষয়ক বিষাদের গান হল বিজয়া। মনে করা হয়, দুই ধরনের গানেরই অনুপ্রেরণা এসেছে বৈষ্ণব গীতিকাব্য হতে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আগমনী ও বিজয়া বিষয়ক উভয় ধরনের সঙ্গীতকে বাঙালির মাতৃহৃদয়ের গান আখ্যা দিয়েছেন।[1]
সমাজ ব্যবস্থার পট পরিবর্তনের সঙ্গে আগমনী গানের ধারা বর্তমানে হ্রাস পেলেও,শরতে দুর্গাপূজার সময়ে,বাঙালির মাতৃহৃদয়ের গান বলেই আগমনী গানের আবেদন চিরকালীন।