এলএইচবি কোচ
From Wikipedia, the free encyclopedia
লিঙ্কা-হফমান-বুশ কোচ (ইংরেজি: Linke-Hofmann-Busch coach) বা এলএইচবি কোচ হচ্ছে ভারতীয় রেলের যাত্রীবাহী কোচ যা জার্মানির লিঙ্কা-হফমান-বুশ উৎপাদন করেছে[1] (অ্যালস্টম দ্বারা টেকওভারের পরে ১৯৯৮ সালে যার নামকরণ করা হয় "অ্যালস্টম এলএইচবি জিএমবিএইচ")।[2] এই কোচের বেশিরভাগ ভারতের কাপুরথালাতে অবস্থিত রেল কোচ ফ্যাক্টরিতে (আরসিএফ) উৎপাদিত হয়।[3] ২০০০ সাল থেকে ভারতীয় রেলের ব্রড গেজ (১৬৭৬ মিমি[4]) নেটওয়ার্কে এগুলো ব্যবহৃত হয়েছে। শুরুতে শতাব্দী এক্সপ্রেসে ব্যবহারের জন্য জার্মানি থেকে ২৪টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচ আমদানি করা হয়েছিল, এরপরে আরসিএফ প্রযুক্তি স্থানান্তরের পরে উৎপাদন শুরু করে।[5]
লিঙ্কা-হফমান-বুশ কোচ | |
---|---|
প্রস্তুতকারক | লিঙ্কা-হফমান-বুশ |
নির্মিত |
|
সবিস্তার বিবরণী | |
সর্বোচ্চ গতি | ২০০ কিমি/ঘ (১২০ মা/ঘ) |
কোচগুলো ১৬০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত অপারেটিং গতির জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এবং এরা ২০০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত যেতে পারে।[6] তবে এদেরকে ১৮০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের দৈর্ঘ্য ২৩.৫৪ মিটার এবং প্রস্থ ৩.২৪ মিটার, যার মানে প্রচলিত রেকের তুলনায় এদের রয়েছে উচ্চতর যাত্রীক্ষমতা।[7] এসি চেয়ার রেল বগি ৩৯.৫ টন ওজনের ছিল।[8] এদেরকে "অ্যান্টি-টেলিস্কোপিক" হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যার অর্থ সংঘর্ষের সময় এরা উল্টিয়ে যাবেনা বা ফ্লিপ করবে না (প্রধানত মুখোমুখি সংঘর্ষে)। এই কোচগুলো স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি এবং এদের অভ্যন্তর অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি যার ফলে প্রচলিত রেকের তুলনায় এগুলো অধিক হালকা।[9] প্রতিটি কোচে উচ্চতর গতিতে দক্ষ ব্রেকিংয়ের জন্য একটি "অ্যাডভান্সড নিউমেটিক ডিস্ক ব্রেক সিস্টেম" রয়েছে, আরও রয়েছে "মডিউলার ইন্টেরিয়র" যা বিস্তৃত জানালার মাধ্যমে আলোককে সিলিং এবং লাগেজ র্যাকগুলিতে একীভূত করে।[10] এলএইচবি কোচের উন্নত সাসপেনশন ব্যবস্থা প্রচলিত রেকের তুলনায় যাত্রীদের আরও আরামদায়ক ভ্রমণ নিশ্চিত করে। এলএইচবি কোচের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পুরাতন রেকের তুলনায় উচ্চতর ক্ষমতা সম্পন্ন এবং তা একটি মাইক্রোপ্রসেসর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় যা গ্রীষ্ম এবং শীত মৌসুমে যাত্রীদের পুরানো কোচের তুলনায় আরও অধিক আরাম দেয় বলে জানা যায়। এগুলি তুলনামূলকভাবে শান্ত, কারণ প্রতিটি কোচ সর্বাধিক ৬০ ডেসিবেল শব্দ উৎপন্ন করে, যেখানে প্রচলিত কোচ করে ১০০ ডেসিবেল।
প্রতিটি এলএইচবি কোচের দাম ১৫–২০ মিলিয়ন ভারতীয় টাকা, যেখানে একটি জেনারেটর গাড়ির দাম প্রায় ৩০ মিলিয়ন।[6][11] ২০১৬ সালে ভারতীয় রেল ঘোষণা করেছিল যে আরও সুরক্ষা এবং আরাম দেওয়ার জন্য সমস্ত আইসিএফ কোচকে এলএইচবি কোচ দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হবে। ২০১৮ সালের ১৯শে জানুয়ারী সর্বশেষ আইসিএফ কোচ উৎপাদন করা হয়।[12]