গোলাম আযম
বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ / From Wikipedia, the free encyclopedia
অধ্যাপক গোলাম আযম (৭ নভেম্বর ১৯২২-২৩ অক্টোবর ২০১৪)[3] ছিলেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এর একজন রাজনীতিবীদ এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দন্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী।[4][5] তিনি ২০০০ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির ছিলেন।[6] গোলাম আযম ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিলেন।[7][8] তিনি ২০০০ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।[9][10][11][12]
গোলাম আজম | |
---|---|
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর | |
কাজের মেয়াদ ১৯৬৯ – ২০০০ | |
পূর্বসূরী | মাওলানা আবদুর রহিম |
উত্তরসূরী | মতিউর রহমান নিজামী |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | (১৯২২-১১-০৭)৭ নভেম্বর ১৯২২[1] ঢাকা,[2] বাঙলা, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ২৩ অক্টোবর ২০১৪(2014-10-23) (বয়স ৯১) বিএসএমএমইউ, ঢাকা |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী |
দাম্পত্য সঙ্গী | আফিফা আজম |
সম্পর্ক | স্ত্রী |
সন্তান | ৬ |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | রাজনীতিবিদ |
ওয়েবসাইট | http://ghulamazam.info/ |
জামায়াতে ইসলামীর নেতা হিসেবে তিনি বিতর্কিত শান্তি বাস্তবায়ন বা শান্তি কমিটির একজন সদস্য ছিলেন, যে কমিটি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্বাধীনতাবিরোধী অন্যান্য পাকিস্তানি বাঙালি নেতাদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল।[13] এছাড়াও তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তার জন্য গঠিত আধাসামরিক বাহিনী আলবদর ও রাজাকার গঠনেরও অভিযোগ রয়েছে।[14] এই মিলিশিয়ারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করা মুক্তিবাহিনীর বিরোধিতা করেছিল এবং এরাও যুদ্ধাপরাধের অভিযুগে অভিযুক্ত।[13][15][16][17] তার আইনজীবীদের ভাষ্যমতে, ১৯৭১ সালে তিনি একজন বেসামরিক সাধারণ নাগরিক ছিলেন বলে তার পক্ষে সেনাবাহিনী পরিচালনা বা কোন ধরনের সামরিক বহিনীর কমান্ডার হওয়ার সুযোগ ছিল না।[18] স্বাধীনতার বিরোধিতা সহ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমে লিপ্ত থাকার জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৩ সালের ১৮ এপ্রিল গোলাম আযম সহ ৪২ জন রাজনৈতিক ব্যক্তির নাগরিকত্ব বাতিল করেছিল।[19][20][21] গোলাম আযম ১৯৭৮ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার অনুমতি ব্যতীত বা ভিসাবিহীন অবৈধভাবে বাংলাদেশে বসবাস করেন।[22][23]
তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, মানবাধীকারকর্মী ও লেখিকা সুলতানা কামাল বলেন, “নিষ্ঠুরতার দিক দিয়ে গোলাম আযম ছিলেন জার্মানির সাবেক শাষক হিটলারের সমকক্ষ যিনি গণহত্যা কার্যকর ও জাতিগত নির্মূলে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করেছিলেন।”[24] এই কথার জবাবে আযমের আইনজীবীরা বলেন, “এটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক ও বানোয়াট। হিটলারের পক্ষে এটা করা সম্ভব ছিল কারণ তার কাছে রাষ্ট্রক্ষমতা ছিল কিন্তু গোলাম আযমের কোন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ছিল না। ১৯৭১ সালে জেনারেল টিক্কা খান ও ইয়াহিয়া খানের কাছে রাষ্ট্রক্ষমতা ছিল।”
১১ জানুয়ারি ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল স্বাধীনতা যুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।[25][26] মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১২ সালের ১১ই জানুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হলে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গোলাম আযমের পক্ষে করা জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন। আদেশে বলা হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামিনের কোনো বিধান নেই। এ ছাড়া মামলার এ পর্যায়ে জামিন দেওয়া সম্ভব নয়।[27][28][29][30][31] ১৫ জুলাই ২০১৩ সালে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের মধ্যে ৫টি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ৯০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল।[32][33][34][35]
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক এই বিচারের সমালোচনা করেছিলেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, যারা প্রথমদিকে বিচারের সমর্থক ছিল এবং পরবর্তীকালে “প্রসিকিউশন এবং যথাযথ প্রক্রিয়া অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন বিচার বিভাগীয় পক্ষপাতিত্ব ও একপেশে দৃষ্টিভঙ্গি” এর সমালোচনা করে, বিচারিক প্রক্রিয়াটিকে গভীরভাবে ত্রুটিযুক্ত এবং আন্তর্জাতিক ন্যায় বিচারের মান পূরণ করতে অক্ষম বলে অভিহিত করে।[36][37][38][39] উল্লেখযোগ্যভাবে, এটি ২০১২ আইসিটি স্কাইপ বিতর্কের কেন্দ্রে ছিল।[40]