জগন্নাথ
হিন্দু দেবতা (সার্বজনীন করুণাময়) / From Wikipedia, the free encyclopedia
জগন্নাথ (অর্থাৎ, "জগতের নাথ" বা "জগতের প্রভু") হলেন একজন হিন্দু দেবতা। ভারতের ওড়িশা, ছত্তিশগড় (বস্তার অঞ্চল), পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, আসাম, মণিপুর ও ত্রিপুরা রাজ্যে[2] এবং বাংলাদেশে তার পূজা প্রচলিত। জগন্নাথ হলেন হিন্দু দেবতা বিষ্ণু বা তার অবতার কৃষ্ণের একটি বিশেষ রূপ।[3] তাকে তার দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রার সঙ্গে পূজা করা হয়।
জগন্নাথ जगन्नाथः ଜଗନ୍ନାଥ | |
---|---|
দেবনাগরী | जगन्नाथः |
সংস্কৃত লিপ্যন্তর | Jàgannātha |
ওড়িয়া লিপি | ଜଗନ୍ନାଥ |
অন্তর্ভুক্তি | বিষ্ণু বা কৃষ্ণের বিমূর্ত রূপ |
আবাস | নীলাচল |
মন্ত্র | ওঁ জগন্নাথদেবায় নমঃ[1] |
অস্ত্র | সুদর্শন চক্র, পাঞ্চজন্য |
বাহন | গরুড় |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
সহোদর | বলভদ্র ও সুভদ্রা |
সঙ্গী | মহালক্ষ্মী ও ভূদেবী |
জগন্নাথের মূর্তি সাধারণত কাঠে তৈরি করা হয়। 'নিম্ব বৃক্ষ' বা নিম গাছের কাঠ দ্বারা জগন্নাথদেবের প্রধান বিগ্রহগুলো (জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা) নির্মিত। এই মূর্তির চোখদুটি বড়ো বড়ো ও গোলাকার। হাত অসম্পূর্ণ। মূর্তিতে কোনো পা দেখা যায় না। বিগ্রহে অসম্পূর্ণ হাত ও পায়ের অনুপস্থিতি নিয়ে নানা ধরনের মতবাদ এবং পবিত্র বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে। জগন্নাথের পূজাপদ্ধতিও অন্যান্য হিন্দু দেবতাদের পূজাপদ্ধতির চেয়ে আলাদা।[4] ওড়িশা রাজ্যের পুরী শহরে জগন্নাথের প্রধান মন্দিরটি অবস্থিত। এই মন্দির হিন্দুধর্মের চারধামের অন্যতম।[5]
বেদে জগন্নাথের সুস্পষ্ট উল্লেখ নেই। তিনি দশাবতার অথবা বৈদিক হিন্দু দেবমণ্ডলীর সদস্যও নন।[6] অবশ্য কোনো কোনো ওড়িয়া গ্রন্থে জগন্নাথকে বিষ্ণুর নবম অবতার রূপে বুদ্ধের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।[7] বিষ্ণুর রূপভেদ হিসেবে জগন্নাথ এক অসাম্প্রদায়িক দেবতা।[8][9][10] তাকে এককভাবে হিন্দুধর্মের কোনো একটি সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত করা যায় না। বৈষ্ণব, শৈব, শাক্ত, স্মার্ত সকল শাখার অনুগামীরাই জগন্নাথকে পূজা করেন। এমনকি বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মসম্প্রদায়ের সঙ্গেও জগন্নাথের যোগ দেখানো হয়।[11]
জগন্নাথের সবচেয়ে বিখ্যাত উৎসবটি হল রথযাত্রা। এই উৎসবের সময় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি মূল মন্দিরের (বড় দেউল) গর্ভগৃহ থেকে বের করে এনে কাঠের তৈরি তিনটি বিরাট রথে করে প্রায় ৩ কিলোমিটার (১.৯ মা) দূরে গুণ্ডিচা মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। ভক্তরাই এই রথগুলো টেনে নিয়ে যান। যেখানেই জগন্নাথ মন্দির আছে, সেখানেই এই ধরনের রথযাত্রা আয়োজিত হয়।