দ্য লর্ড অব দ্য রিংস
From Wikipedia, the free encyclopedia
দ্য লর্ড অফ দ্য রিংস (ইংরেজি ভাষায়: The Lord of the Rings) ইংরেজ ভাষাবিজ্ঞানী জে. আর. আর. টলকিন রচিত একটি মহাকাব্যিক হাই ফ্যান্টাসি উপন্যাস। টলকিনের পূর্ববর্তী, অপেক্ষাকৃত কম জটিল ছোটোদের ফ্যান্টাসি উপন্যাস দ্য হবিট-এর (১৯৩৭) পরিপূরক উপন্যাস (সিকোয়েল) রূপে এই গল্পের সূত্রপাত হলেও, ধীরে ধীরে এটি একটি বৃহত্তর রচনার আকারে বিকশিত হয়ে ওঠে। ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৯ সালের মধ্যবর্তী সময়ে, মুখ্যত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ধাপে ধাপে এই উপন্যাসটি রচনা করা হয়।[1] টলকিন প্রথমে একটি খণ্ডে উপন্যাসটি সমাপ্ত করতে চাইলেও, এটি প্রথমে তিন খণ্ডে প্রকাশিত হয়। যুদ্ধোত্তর বাজারে কাগজের দুষ্প্রাপ্যতার কারণে ১৯৫৪-৫৫ সালের আগে উপন্যাসটি প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীকালে একাধিকবার এই উপন্যাস পুনর্মুদ্রিত হয় এবং একাধিক ভাষায় অনূদিত হয়।[2] এই কারণে এই উপন্যাসকে বিংশ শতাব্দীর সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী রচনা বলে মনে করা হয়।
লেখক | জে. আর. আর. টলকিন |
---|---|
দেশ | যুক্তরাজ্য |
ভাষা | ইংরেজি |
ধরন | হাই ফ্যান্টাসি, অ্যাডভেঞ্চার উপন্যাস, বীররসাত্মক রোম্যান্স, অ্যাকশন অ্যাডভেঞ্চার |
প্রকাশক | জিও. অ্যালেন অ্যান্ড আনউইন |
প্রকাশনার তারিখ | ১৯৫৪ ও ১৯৫৫ |
মিডিয়া ধরন | মুদ্রণ (হার্ডব্যাক ও পেপারব্যাক) |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ১২১৬ পৃষ্ঠা (সামগ্রিক) |
পূর্ববর্তী বই | দ্য হবিট |
- অন্যান্য ব্যবহারের জন্য দেখুন: দ্য লর্ড অফ দ্য রিংস (দ্ব্যর্থতা নিরসন)
উপন্যাসের শিরোনাম কাহিনির প্রধান খলনায়ক ডার্ক লর্ড (কালো জাদুকর) সাউরনের পরিচায়ক। তিনি এক পূর্ববর্তী যুগে একটি ওয়ান রিং (এক অঙ্গুরীয়) সৃষ্টি করেন অন্যান্য রিংস অফ পাওয়ার (শক্তি অঙ্গুরীয়)-গুলির উপর আধিপত্য কায়েম করার ইচ্ছায়। এই ওয়ান রিং-ই ছিল মিডল-আর্থ (মধ্য-পৃথিবী) দখলের অভিযানে তাঁর চরম অস্ত্র। কাহিনির সূত্রপাত শায়ার নামে পরিচিত হবিটদের দেশে। এই শায়ার খানিকটা ইংল্যান্ডের গ্রামাঞ্চলের মতো। পরে মিডল-আর্থের বিভিন্ন অঞ্চল পরিভ্রমণকারী এই কাহিনির মূল চরিত্রগুলি, বিশেষত হবিট চরিত্রগুলির, চোখ দিয়ে কাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে। এই চরিত্রগুলি হল ফ্রোডো ব্যাগিনস, স্যামওয়াইজ গ্যামজি (স্যাম), মেরিয়াডক ব্র্যান্ডিবাক (মেরি) ও পেরেগ্রিন টুক (পিপিন)। মিডল-আর্থ নামক এই কাল্পনিক পৃথিবীর বাসিন্দারা হল মানুষ ও অন্যান্য মনুষ্যপ্রতিম জাতি (হবিট, এলফ, ডুয়ার্ফ ও অর্ক)। এছাড়াও রয়েছে বেশ কিছু বাস্তব ও কাল্পনিক জীবের উল্লেখ (যেমন, এন্ট, ওয়ার্গ, বালরগ, ট্রল ইত্যাদি)। এছাড়াও রয়েছে মানুষের চেয়েও উচ্চ প্রজাতির ফেরেস্তা সদৃশ ভালার ও মায়ার যাদেরকে মানুষরা যথাক্রমে ঈশ্বর ও জাদুকর হিসেবে জানে। তবে এই কাল্পনিক পৃথিবীতে স্রষ্টা বা ঈশ্বর একজন, যাকে এরু ইলুভাটার নামে ডাকা হয়।
টলকিনের অন্যান্য রচনার সঙ্গে সঙ্গে লর্ড অফ দ্য রিংস-ও উৎস ও বিষয়বস্তুর বিস্তারিত বিশ্লেষণের বিষয়। এটি একটি প্রধান রচনা হলেও ১৯১৭ সাল থেকে চলে আসা টলকিনের একটি বিশাল কর্মকাণ্ডের শেষ পর্যায়। এই কর্মকাণ্ডের নাম টলকিন রেখেছিলেন মিথোপোয়িয়া।[3] লর্ড অফ দ্য রিংস-এর কাহিনি এবং এর পূর্ববর্তী উপন্যাসটির উপর প্রভাব বিস্তার করেছে ভাষাবিজ্ঞান, পুরাণকথা, ধর্ম ও শিল্পায়ণের প্রভাবের প্রতি লেখকের বিতৃষ্ণা। এছাড়াও পূর্বতন ফ্যান্টাসি সাহিত্য ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধে টলকিনের অভিজ্ঞতার প্রভাবও এই উপন্যাসে দেখা যায়।[4] আধুনিক ফ্যান্টাসি সাহিত্যেও টলকিনের প্রভাব অপরিসীম। এই প্রভাবের গুরুত্ব এতটাই যে "টলকিনিয়ান" ও "টলকিনেস্ক" শব্দদুটির প্রয়োগ "অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি"-তে অনুমোদিত হয়েছে।[5]
লর্ড অফ দ্য রিংস-এর দীর্ঘস্থায়ী জনপ্রিয়তার কারণে জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে এই রচনার উল্লেখ করা হতে থাকে। টলকিনের রচনার ভক্তেরা একাধিক ক্লাব স্থাপন করেন।[6] টলকিন ও তাঁর রচনা সম্পর্কিত একাধিক গ্রন্থও প্রকাশিত হয়। লর্ড অফ দ্য রিংস অনুপ্রাণিত করে চিত্রকলা, সংগীত, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন, ভিডিওগেম ও পরবর্তী সাহিত্যধারাকে। লর্ড অফ দ্য রিংস নাট্যায়িত হয় বেতার, মঞ্চ ও চলচ্চিত্রে।