ব্রাহ্মণ (হিন্দুশাস্ত্র)
হিন্দু শ্রুতি শাস্ত্রের অন্তর্গত গ্রন্থাবলী / From Wikipedia, the free encyclopedia
ব্রাহ্মণ (দেবনাগরী: ब्राह्मणम्) হল হিন্দু শ্রুতি শাস্ত্রের অন্তর্গত গ্রন্থরাজি। এগুলো বেদের ভাষ্য। ব্রাহ্মণ গ্রন্থাবলির মূল উপজীব্য যজ্ঞের সঠিক অনুষ্ঠানপদ্ধতি।
প্রত্যেকটি বেদের নিজস্ব ব্রাহ্মণ রয়েছে। ষোড়শ মহাজনপদের সমসাময়িককালে মোট কতগুলো ব্রাহ্মণ প্রচলিত ছিল তা জানা যায় না। মোট ১৯টি পূর্ণাকার ব্রাহ্মণ অদ্যাবধি বিদ্যমান: এগুলোর মধ্যে দুটি ঋগ্বেদ, ছয়টি যজুর্বেদ, দশটি সামবেদ ও একটি অথর্ববেদের সঙ্গে যুক্ত। এছাড়াও কয়েকটি সংরক্ষিত খণ্ডগ্রন্থের সন্ধান পাওয়া যায়। ব্রাহ্মণগুলোর আকার বিভিন্ন প্রকারের। শতপথ ব্রাহ্মণ স্যাক্রেড বুকস অফ দি ইস্ট গ্রন্থের পাঁচ খণ্ড জুড়ে বিধৃত হয়েছে; আবার বংশ ব্রাহ্মণের দৈর্ঘ্য মাত্র এক পৃষ্ঠা।
বেদোত্তর যুগের হিন্দু দর্শন, প্রাক-বেদান্ত সাহিত্য, আইন, জ্যোতির্বিজ্ঞান, জ্যামিতি, ব্যাকরণ (পাণিনি), কর্মযোগ, চতুরাশ্রম প্রথা ইত্যাদির বিকাশে ব্রাহ্মণ গ্রন্থগুলোর ভূমিকা অনস্বীকার্য। কোনো কোনো ব্রাহ্মণের অংশগুলো আরণ্যক বা উপনিষদের মর্যাদাপ্রাপ্ত।
ব্রাহ্মণের ভাষা বৈদিক সংস্কৃত থেকে পৃথক। এই ভাষা সংহিতা (বেদের মন্ত্রভাগ) অংশের ভাষার তুলনায় নবীন, তবে এর অধিকাংশই সূত্র সাহিত্যের ভাষার তুলনায় প্রবীন। ব্রাহ্মণগুলো লৌহযুগ অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব নবম, অষ্টম ও সপ্তম শতাব্দীতে রচিত। কয়েকটি নবীন ব্রাহ্মণ (যেমন শতপথ ব্রাহ্মণ) সূত্র সাহিত্যের সমসাময়িক, অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে রচিত।[1] ঐতিহাসিকভাবে, ব্রাহ্মণ গ্রন্থাবলির রচনাকাল পরবর্তী বৈদিক যুগের উপজাতীয় রাজ্যগুলোর ষোড়শ মহাজনপদ রূপে উত্তরণের কাল।