যোগব্যায়াম
যোগশাস্ত্র / From Wikipedia, the free encyclopedia
যোগ (সংস্কৃত: योग, আইএএসটি: Jóga, উর্দু: یوگا, গ্রিক: Γιόγκα, জাপানি: ヨーガ, হিব্রু ভাষায়: יוגה, আরবি: يوجا, কোরীয়: 요가, চীনা: 瑜伽, তেলুগু: యోగా, কন্নড়: ಯೋಗ, সিংহলি: යෝග, থাই: โยคะ) ভারতীয় উপমহাদেশে উদ্ভূত ঐতিহ্যবাহী শারীরবৃত্তীয় এবং মানসিক সাধনপ্রণালী।[1] শব্দটি দ্বারা হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের ধ্যানপ্রণালীকেও বোঝায়।[2][3][4] হিন্দুধর্মে এটি হিন্দু দর্শনের ছয়টি প্রাচীনতম (আস্তিক) শাখার অন্যতম।[5][6] জৈনধর্মে যোগ মানসিক, বাচিক ও শারীরবৃত্তীয় কিছু প্রক্রিয়ার সমষ্টি।
যোগব্যায়াম | |
---|---|
দেশ | ভারত |
ধরন | ঐতিহ্যবাহী শারীরবৃত্তীয় ও মানসিক সাধনপ্রণালী |
অন্তর্ভূক্তির ইতিহাস | |
অন্তর্ভূক্তি | ২০১৬ |
তালিকা | প্রতিনিধিত্বমূলক |
হিন্দু দর্শনে যোগের প্রধান শাখাগুলি হল রাজযোগ, কর্মযোগ, জ্ঞানযোগ, ভক্তিযোগ ও হঠযোগ।[7][8][9] ভারতীয় দার্শনিক সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের মতে, পতঞ্জলির যোগসূত্রে যে যোগের উল্লেখ আছে, তা হিন্দু দর্শনের ছয়টি প্রধান শাখার অন্যতম (অন্যান্য শাখাগুলি হলো কপিলের সাংখ্য, গৌতমের ন্যায়, কণাদের বৈশেষিক, জৈমিনীর পূর্ব মীমাংসা ও বদরায়ানের উত্তর মীমাংসা বা বেদান্ত)।[10] এছাড়াও উপনিষদ্, ভগবদ্গীতা, হঠযোগ প্রদীপিকা, শিব সংহিতা ও বিভিন্ন তন্ত্রগ্রন্থে যোগ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে ।
যোগ বিষয়ে উল্লিখিত পুরোনো গ্রন্থসমূহ থেকে এর সময়ক্রম সম্বন্ধে স্পষ্টধারণা পাওয়া যায় না । কিছু গ্রন্থ যেমন হিন্দুদের উপনিষদ[11] বা বৌদ্ধধর্মের [12] পালি ভাষায় লেখা কতিপয় ধর্মশাস্ত্রে যোগের বিষয়ে প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। পতঞ্জলি যোগসূত্রসমূহ খৃস্ট জন্মের প্রায় পাঁচশ বছরের ভিতরে লেখা হয়েছিল [13] যদিও বিংশ শতকে এটি প্রসারতা লাভ করতে সক্ষম হয়েছিল। খৃষ্টিয় ১১ শতকে হঠযোগের পুথিসমূহের আবির্ভাব হয়েছিল তান্ত্রিক পন্থা থেকে।[14][15]
স্বামী বিবেকানন্দের সফলতার পর, উনিশ শতকের শেষভাগে এবং বিংশ শতকের প্রারম্ভ থেকে বিভিন্ন সময়ে ভারতবর্ষের যোগাচার্য্যগণ পশ্চিমা দেশসমূহে যোগবিদ্যার প্রচার করেন।[15] ১৯৮০ র দশকে পাশ্চাত্য দেশসমূহে এটি শরীরচর্চার অঙ্গ হিসেবে জনপ্রিয় হয়। অবশ্য ভারতীয় পরম্পরায় যোগকে কেবল এক শরীরচর্চার অঙ্গ মাত্র জ্ঞান করা হয় না, এর একটি আধ্যাত্মিক এবং ধ্যানের প্রাণতা আছে বলে বিবেচনা করা হয়।[16] তদুপরি, সাংখ্য দর্শনের সাথে বহু মিল থাকা যোগ হল হিন্দুধর্মের ছয়টি মূল দর্শনের একটি, যার নিজেরই এক মীমাংসা প্রণালী (epistemology) এবং তত্ত্ব (metaphysics) আছে।[17]
কর্কটরোগ, স্কিৎজোফ্রেনিয়া, হাঁপানি, হৃদরোগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে যোগের সুফলতার বিষয়ে বহু পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে। এসব পরীক্ষাসমূহের ফলাফল এখনো স্পষ্টভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।[18][19] অন্যদিকে, কর্কটরোগের ক্ষেত্রে কিছু পরীক্ষার থেকে জানা গেছে যে, যোগাভ্যাস করার ফলে কর্কটরোগ হওয়ার প্রবণতা কমে যায় এবং কর্কটরোগীর মনস্তাত্ত্বিকভাবে রোগ নিরাময় করার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।