শ্রীলংকার গৃহযুদ্ধ
From Wikipedia, the free encyclopedia
শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধ হলো পুরো শ্রীলঙ্কা দ্বীপ জুড়ে সংঘটিত হওয়া একটি সশস্ত্র সংঘাত। ১৯৮৩ সালের ২৩ জুলাই তারিখ থেকে শুরু হওয়া সরকারের বিরুদ্ধে বিরতিহীন এই বিদ্রোহটি ছিল লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলম (এলটিটিই; যারা তামিল টাইগার নামেও পরিচিত) কর্তৃক দ্বীপের উত্তর ও পূর্ব অংশ নিয়ে তামিল ঈলাম নামে তামিল জাতিগোষ্ঠীর জন্য একটি স্বাধীন তামিল রাষ্ট্র গঠনের লড়াই। ২৬ বছর ধরে সামরিক অভিযান পরিচালনার পর শ্রীলঙ্কা সামরিক বাহিনী ২০০৯ সালের মে মাসে তামিল টাইগারদেরকে পরাজিত করার মাধ্যমে গৃহযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে সক্ষম হয়।[1] ২৫ বছরেরও অধিক সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে দেশের জনসংখ্যা, পরিবেশ ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিমাণের ক্ষতির সৃষ্টি হয়েছে, যা প্রাথমিক হিসাব অনুসারে ৮০,০০০-১,০০,০০০ জন মানুষের জীবনহানির কারণ হয়েছে।[15] ২০১৩ সালে জাতিসংঘের প্রেরিত দল যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে অতিরিক্ত মৃত্যুর ঘটনা ঘটার বিষয়েটি উল্লেখ করেছে: "প্রায় ৪০,০০০-এরও বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে, যদিও অন্যান্য স্বাধীন প্রতিবেদনগুলি আনুমানিক মৃত্যুর সংখ্যা ১,০০,০০০ অতিক্রম করার কথা দাবী করছে।"[19] সংঘর্ষের প্রাথমিক পর্যায়ে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী এলটিটিই কর্তৃক দখলকৃত এলাকা পুনর্দখলের করার জন্য প্রচেষ্টা চালায়। সরকারি বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে নেয়া লিবারেশন টাইগারস অব তামিল ইলমের কর্মপন্থার কারণে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, কানাডা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলি সহ ৩২টি দেশে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভূক্ত গোষ্ঠীতে পরিণত হয়।[20] শ্রীলঙ্কার সরকার বাহিনীকেও মানবাধিকারের অপব্যবহার, নিয়মিত শাস্তি প্রদানের দ্বারা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন, আটকদের প্রতি মানবিক সম্মান প্রদর্শনের অভাব এবং জোরপূর্বক অন্তর্ধান সম্পর্কিত অভিযোগসমূহের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে।[21]
শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধ ශ්රී ලාංකික සිවිල් යුද්ධය இலங்கை உள்நாட்டுப் போர் | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
এলটিটিই কর্তৃক তামিল ইলম হিসাবে দাবীকৃত শ্রীলঙ্কার ভূমির মানচিত্র যেখানে প্রধান যুদ্ধগুলি সংগঠিত হয়েছে। | |||||||||
| |||||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||||
ভারতীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী (১৯৮৭-১৯৯০) | লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলম | ||||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||||
J. R. Jayawardene (১৯৮৩–১৯৮৯) আর. ভেঙ্কোটরমন (১৯৮৭–১৯৮৯) রাজীব গান্ধী (1987–1989) † |
ভি. প্রভাকরণ † (১৯৮৩–২০০৯) বলরাজ Karuna Amman (1983–2004) KP Mahattaya পত্তু আম্মান শংকর † শসাই † | ||||||||
শক্তি | |||||||||
শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনী: ভারতীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী: ১,০০,০০০ (সর্বোচ্চ) |
লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলম (excluding Auxiliary forces): 6,000 (2001) 7,000 (2003 18,000 (2004)[2][3]) 11,000 (2005) 8,000 (2006) 7,000 (2007)[2][4] (including Auxiliary forces): 25,000 (2006) 30,000 (2008)[5] | ||||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||||
23,327+ killed ১,২০০ নিহত (ভারতীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী)[9] |
২৭,০০০+ নিহত[10][11][12][13] ১১,৬৪৪ বন্দী[14] | ||||||||
100,000+ killed overall (estimate)[15] ৮,০০,০০০ উদ্বাস্তু ২০০১ সালের সর্বোচ্চ উত্তেজনা চলাকালীন সময়[16] | |||||||||
১৬ মে ২০০৯: শ্রীলঙ্কা সরকার সেনা অভিযানেএলটিটিই'র পতনের ঘোষণা দেয়।[17] ১৭ মে ২০০৯: এলটিটিই স্বীকার করে নেয় শ্রীলঙ্কা সরকার কর্তৃক পরাজয়ের দাবীকে।[18] ১৯ মে ২০০৯: রাষ্ট্রপতি মাহিন্দ্র রাজাপাকশে সংসদে আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহযুদ্ধ অবসানের কথা ঘোষণা করেন। |
ভারতীয় সেনাবাহিনীর অসফল চেষ্টার অংশ হিসাবে ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ভারতীয় শান্তি রক্ষী বাহিনীর উপস্থিতি সহ দুই দশকের যুদ্ধ এবং শান্তি আলোচনার চারটি প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হলে, এই সংঘর্ষের একটি স্থায়ী সফল নিষ্পত্তির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল যখন ২০০১ সালের ডিসেম্বর মাসে একটি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয় এবং ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের সহায়তায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।[22] পরবর্তীতে, ২০০৫ সালের শেষের দিকে সীমিত শান্তির অবসান ঘটিয়ে যুদ্ধের পুনরাবৃত্তি ঘটে এবং জুলাই ২০০৬ সালে সরকার পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে এলটিটিই'র বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি প্রধান সামরিক অভিযান শুরুর দ্বারা সমগ্র পূর্বাঞ্চল থেকে এলটিটিইকে সরিয়ে দেয়ার জন্য অভিযান চালানো শুরু না-করা পর্যন্ত তা বজায় থাকে। এলটিটিই তখন ঘোষণা করে যে তারা "নিজেদের জন্য একটি পৃথক রাজ্য অর্জনের জন্য তাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম পুনরায় শুরু করবে"।[23][24]